পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○のbr রবীন্দ্র-রচনাবলী একমাত্র উপায়। ভারতবর্ষ একদিন নিয়মের দ্বারা সমাজকে খুব করিয়া বাধিয়াছিল। মানুষ সমাজের মধ্য দিয়া সমাজকে ছাড়াইয়া যাইবে বলিয়াই বাধিয়াছিল। ঘোড়াকে তাহার সওয়ার লাগাম দিয়ে বঁধে কেন, এবং নিজেই বা তাহার সঙ্গে রেকবের দ্বারা বদ্ধ হয় কেন— ছুটিতে হইবে বলিয়া, দূরের চির-অবলম্বন নহে— সমাজ হইয়াছে মানুষকে মুক্তির পথে অগ্রসর করিয়া দিবার জন্য। সংসারের ཁུ་བཞུ་བ་མཚོ་མལ་ལ་ বেশি করিয়াই স্বীকার করিয়াছে তাহার হাত হইতে বেশি করিয়া নিস্কৃতি পাইবার 33 এইরূপে বন্ধন ও মুক্তি, উপায় ও উদ্দেশ্য, উভয়কেই মান্য করিবার কথা প্রাচীন উপনিষদের মধ্যেও দেখা যায় । ঈশোপনিষৎ বলিতেছেন অন্ধং তমঃ প্রবিশন্তি যে অবিদ্যামুপাসতে | ততো ভুয় ইব তে তমো যউ বিদ্যায়াং রতঃ ॥ যাহারা কেবলমাত্র অবিদ্যা অর্থাৎ সংসারের উপাসনা করে, তাহারা অন্ধতমসের মধ্যে প্রবেশ করে ; তদপেক্ষাও ভূয় অন্ধকারের মধ্যে প্রবেশ করে তাহারা, যাহারা কেবলমাত্র ব্রহ্মবিদ্যায় নিরত। दिाक्षादिनाथ3 राख्छ(क्ष0ाऊश९ अश् । অবিদ্যয়া মৃত্যুং তীৰ্ত্তা বিদ্যয়ামৃতমশ্বতে ৷ বিদ্যা এবং অবিদ্যা উভয়কেই যিনি একত্র করিয়া জানেন, তিনি অবিদ্যাদ্ধারা মৃত্যু হইতে উত্তীর্ণ । হইয়া বিদ্যাদ্ধারা অমৃত প্ৰাপ্ত হন। মৃত্যুকে প্রথমে উত্তীর্ণ হইতে হইবে, তাহার পরে অমৃতলাভ । সংসারের ভিতর দিয়া এই মৃত্যুকে উত্তীর্ণ হইতে হয়। কর্মের মধ্যে প্রবৃত্তিকে যথার্থভাবে নিযুক্ত করিয়া আগে সেই প্রবৃত্তিকে ও কর্মকে ক্ষয় করিয়া ফেলা, তার পরে ব্ৰহ্মলাভের কথা— সংসারকে বলপূর্বক অস্বীকার করিয়া কেহ অমৃতের অধিকার পাইতে পারে না । কুর্বািন্নবেহ কর্মণি জিজীবিষেৎ শতং সমাঃ । এবং তুয়ি নান্যথেতোহস্তি ন কর্ম লিপ্যতে নরে ৷ কর্ম করিয়া শতবৎসর ইহলোকে জীবিত থাকিতে ইচ্ছা করিবে- হে নর, তোমার পক্ষে ইহার আর অন্যথা নাই ; কর্মে লিপ্ত হইবে না, এমন পথ নাই। মানুষকে পূর্ণতালাভ করিতে হইলে পরিপূর্ণ জীবন এবং সম্পূর্ণ কর্মের প্রয়ােজন হয়। জীবন সম্পূর্ণ হইলেই জীবনের প্রয়োজন নিঃশেষ হইয়া যায়, কর্ম সমাপ্ত হইলেই কর্মের বন্ধন শিথিল হইয়া আসে । জীবনকে ও জীবনের অবসানকে, কর্মকে ও কর্মের সমাপ্তিকে এইরূপ অত্যন্ত সহজভাবে গ্রহণ করিতে হইলে যে-কথাটি মনে রাখিতে হইবে, তাহা ঈশোপনিষদের প্রথম শ্লোকেই রহিয়াছে ঈশাৱাস্যমিদং সৰ্ব্বং যৎ কিঞ্চি জগত্যাং জগৎ | ঈশ্বরের দ্বারা এই জগতের সমস্ত যাহা-কিছু আচ্ছন্ন জানিবে। এবং তেন ত্যক্তেন ভুঞ্জীথা মা গৃধঃ কস্যস্বিদ্ধনম | দুয়ুট্যাগ করতেছেন-ভিন্ন যন্ত দিতেছে, তাই ভােগ করবে, আন কাহারও স্থান লাভ রবে না । সংসারকে যদি ব্ৰহ্মের দ্বারা আচ্ছন্ন বলিয়া জানিতে পারি, তাহা হইলে সংসারের বিষ কাটিয়া যায়, তাহার সংকীর্ণতা দূর হইয়া তাহার বন্ধন আমাদিগকে আঁটিয়া ধরে না। এবং সংসারের ভোগকে ঈশ্বরের দান বলিয়া গ্ৰহণ করিলে কড়াকড়ি-মারামারি থামিয়া যায়। এইরূপে সংসারকে, সংসারের সুখকে, কর্মকে ও জীবনকে ব্ৰহ্ম-উপলব্ধির সঙ্গে যুক্ত করিয়া খুব বড়ো করিয়া জানাটা হইল সমাজ-রচনার, জীবন-নির্বাহের গোড়াকার কথা । , ভারতবর্ষ এই ভূমীর সুরেই সমাজকে বাধিবার চেষ্টা করিয়াছিল। সমাজকে বাধিয়া মানুষের