পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/১০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बजर्शब८झङा সুন্দ দি কলা • আল না লতি আলি। দাসী কারাগারে প্রবেশ i ঘরের ভিতর তৃণশয্যায় বীরপর্য নিদ্রিত রহিয়াছেন। ইন্দ্রনাথের ললাট পরিস্কার, ওঠে হাসির চিহ্ন-এ দঃখসাগরে তিনি কি"সখস্বল্পদৈখিতেছেন? দেখিতেছেন, যেন আজি পর্ণিমা, যেন অদ্য তিনি যুদ্ধে জয়লাভ করিয়া পনরায় রন্দ্রপরে গিয়াছেন, যেন বহুদিন পরে হৃদয়ের সরলাকে পাইয়া হৃদয়ে স্থান দিয়াছেন, যেন সরলার আনন্দাশ্রমতে তাঁহার বক্ষঃস্থল সিক্ত হইতেছে। সহসা ইন্দ্রনাথের নিদ্রা ভঙ্গ হইল। চমকিত হইয়া দেখিলেন তাঁহার তৃণশয্যার পাশ্বে উপবেশন করিয়া একজন নারী যথার্থই রোদন করিতেছে, কারাগাহের সেই দাসী নীরবে দরবিগলিত ধারা বিসঙ্গজনি করিতেছে! ইন্দ্রনাথ শিহরিয়া উঠিলেন। দাসীর মায়া ও মমতা দেখিয়া তাঁহার হৃদয় দ্রবীভূত হইল, আপনি আশ্রসেম্বরণ করিতে পারিলেন না। বলিলেন-হতভাগার দুঃখে তুমি কিজন্য দুঃখিনী ? আমার আর জীবনের আশা নাই, পরমেশ্বর তোমাকে সখী করন। দাসী উত্তর করিল না, নীরবে ক্ৰন্দন করিতে লাগিল। ইন্দ্রনাথ আবার বলিলেন,— এ অসময়ে তুমি আমার প্রতি যে মমতা প্রকাশ করিলে জগদীশ্বর তজন্য তোমাকে সুখে রাখিবেন। আমি তোমাকে কিছল দিয়া পরস্কৃত করি এরপে আমার কিছু নাই, আমি বন্দী। এই সবর্ণের অঙ্গরীয়টী গ্রহণ কর, আমার বিপদ ও পীড়ার সময় যেরপে শশ্রেষা করিলে, 呜 হস্তে আমার মৃত্যু হইলে পরে এই অঙ্গরীয়টী দেখিয়া এক একবার আমার কথা সমরণ করিও। দাসী অনেকক্ষণ কোনও উত্তর করিল না, অনেকক্ষণ অধোবদনে আশ্রবেষণ করিতে লাগিল । অবশেষে নীরবে হস্ত প্রসারণ করিয়া সেই অঙ্গরীয়টী গ্রহণ করিল, নীরবে সেটা আপনার কন্ঠমালায় বধিয়া রাখিল। কতক্ষণ পরে চক্ষজল মোচন করিয়া অসফট স্বরে বলিল,—সৈনিকবর ! আপনি আমার প্রতি তুষ্ট হইয়াছেন, আমার প্রতি সদয় হইয়াছেন, তাহারই চিহ্ন স্বরুপ এই অঙ্গরীয়টী গ্রহণ করিলাম, তাহারই স্মরণাথ এটী আজীবন ধারণ করিব। সেনাপতি ইন্দ্রনাথ বোধ হয় দাসীকে বিস্মত হইয়াছেন। সে কোকিলবিনিন্দিত স্বরে ইন্দ্রনাথ চমকিত হইলেন, শয্যায় একেবারে উঠিয়া বসিলেন! বনগ্রামের মহেশ্বর-মন্দিরে সে স্বর একবার শুনিয়াছিলেন, গঙ্গাবক্ষের উপর নৌকামধ্যে সে সবর আর একবার শনিয়াছিলেন । গঙ্গায় জলমগ্ন হইবার সময় যে নারী ইন্দ্রনাথকে একবার উদ্ধার ইন্দ্রনাথের উদ্ধার করিতে আসিয়াছেন! চিন্তা তরঙ্গমালার ন্যায় ইন্দ্রনাথের হৃদয়ে উথলিত হইতে লাগিল, তাঁহার হৃদয় সফীত হইল, নয়ন দটী জলে পণে হইল। শেষে বিমলার হস্ত দটী ধরিয়া করণস্বরে বলিলেন,—মানবী কি দেবী ! আপনি কে আমি জানি না, কিন্তু বিপদকালে আপনি আমার চির সহায়। এই বিপদপণে শত্রশিবিরে আপনি আমার উদ্ধারাথ একাকিনী আসিয়াছেন? আপনাকে দাসী বলিয়া কথা কহিয়াছি ? আমার জীবনদান করিয়াছেন তত্তজন্য তুচ্ছ অর্থ পুরস্কার দিতে চাহিয়াছি ? এসকল অপরাধ কি আপনি মাজ’না করিবেন ? ইন্দ্রনাথের কথাগুলি যেন বিমলার কণে অমত বর্ষণ করিল, ইন্দ্রনাথের হস্ত-সংস্পশে বিমলার শরীর কপিতে লাগিল, গাত্র কণ্টকিত হইল! কিন্তু বিমলা প্রত্যুৎপন্নমতি ; যত্নে আত্মসংযম করিয়া ধীরে ধীরে ইন্দ্রনাথের হস্ত হইতে আপন হস্ত সরাইয়া লইলেন ও ধীরস্বরে উত্তর করিলেন,—সৈনিকবর, আপনার অপরাধ নাই, আমি দাসী বেশে আসিয়াছি, আপনি আমাকে দাসী বিবেচনায় যথেস্ট সৌজন্য প্রকাশ করিয়াছেন। আপনি যে পরস্পকার দিয়াছেন তাহা আমি আজীবন হৃদয়ে ধারণ করিব, আজি যে আমার প্রতি একট স্নেহ প্রকাশ করিলেন, আজীবন তাহা স্মরণ রাখিব। কিন্তু এক্ষণে এ সমস্ত কথা কহিবার অবসর নাই, এক্ষণে অন্য কথা বলিতে আপনার নিকট আসিয়াছি। আমি আপনার উদ্ধারের উপায় সঙ্কল্প করিয়াছি, কারাগাহের প্রহরিস্বয় চৈতনাশন্য হইয়াছে, আপনি এই রমণীর বেশ ধারণ করিয়া চলিয়া যাউন। কারাগাহের বাহিরে দৈনিকগণ যদি কোন কথা জিজ্ঞাসা করে, বলিবেন—আমি ভিকারিণী দাসী। ইন্দ্রনাথ এই কথা শুনিয়া স্তম্ভিত হইলেন, বিমলার সাহস ও স্থিরসঙ্কপে দেখিয়া বিস্মিত ૭૧