পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/১৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মায়ৰাকস্তক বিংশতি বৎসর সম্রাটের কম করিয়াছে; সবাদারের কায্যে আমার কেশ শুরু হইয়াছে, ললাট খঙ্গে ক্ষত হইয়াছে। গোলামের কিঞ্চিৎ আবেদন আছে। সবাদার বলিলেন,—এফান, তুমি আমাদের প্রধান অনুচর ও অতিশয় প্রিয়পায়, তোমার এমন কি যাদ্ধা আছে যাহা আমাদের আদেয় ? এফান ভূমি পৰ্য্যন্ত শির নোয়াইয়া পনরায় বলিলেন,—জে'হাপনা ! বঙ্গদেশবাসিগণ অতি দব্বল; তাহদের মধ্যে সময়ে সময়ে যে পরাক্রান্ত জমীদারগণ আমাদিগের যুদ্ধে সাহায্য করে, সে সবাদারের প্রতিভাজন সন্দেহ নাই। জমীদার বীরেন্দ্ৰসিংহ একজন সেইরুপ লোক ছিলেন। সবাদার বলিলেন,–হাঁ, আমি সেই হিন্দরে নাম শুনিয়াছি, পাঠানদিগের সহিত আমাদের যন্ধে সে সাহায্য করিয়াছিল। এফান পনরায় তসলীম করিয়া বলিল,—জে'হাপনা ! যাহা কহিলেন যথার্থ। এই দাস যখন উড়িষ্যার যুদ্ধে গিয়াছিল, সবচক্ষে বীরেন্দ্রের যুদ্ধকৌশল ও রাজভক্তি দেখিয়াছিল। এই রাজসভায় অনেক পরাক্রান্ত পাঠান ও মোগল যোদ্ধা আছেন, কিন্তু বীরেন্দ্র অপেক্ষা অধিক সাহসী পর্ষ এ গোলাম এ পয্যন্ত দেখে নাই। সভাস্থদিগের কোষে আসি ঝনঝনার শব্দ হইল, মুসলমানদিগের মুখ রক্তবর্ণ হইয়া উঠিল। কিন্তু সজো সহাস্যবদনে বলিলেন,–এফান, তুমি কাফেরের অত্যন্ত প্রশংসা করিয়াছ, কিন্তু অযথার্থী নহে, সে হিন্দ যথার্থ সাহসী ছিল শনিয়াছি। এক্ষণে তাহার জন্য কি বলিবার আছে বল, তোমার উপরোধে আমি তাহাকে যে কোন পরস্কার দিতে প্রস্তুত আছি। এফান গম্ভীরস্বরে বলিলেন,—যিনি সবাদারের উপর সবাদার, পাদশাহের উপর পাদশাহ, তিনিই কেবল এক্ষণে বীরেন্দ্রকে পরস্কার বা শাস্তি নিতে পারেন। আমি তাঁহার অনাথ বালকের জন্য আবেদন করিতেছি। বালক এক্ষণে দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করিতেছে, কানঙ্গ মহাশয়ের যোগে এক শঠ তাঁহার পৈতৃক জমীদারী কাড়িয়া লইয়াছে। ভ্রম-কুঞ্চিত করিয়া সবাদার কানঙ্গকে সবিশেষ জিজ্ঞাসা করিলেন। সে সময়ে সমস্ত খাজনা ও জমীদারী বিষয় কানঙ্গ মহাশয়ের হস্তে থাকিত, এমন কি, বঙ্গদেশের সবাদার যে সমস্ত কাগজাৎ দিল্লীতে পাঠাইতেন, তাহাও কানঙ্গর সহি না হইলে গ্রাহ্য হইত না। কানঙ্গ মহাশয় মারের অথর্বভোগী, বিনীতভাবে বলিলেন,—সবাদার মহাশয়ের আদেশ আমাদের শিরোধাৰ্য্য ; বীরেন্দ্রের মৃত্যুর পর কয়েক বৎসর খাজনা আদায় না হওয়ায় জে’হাপনা সেই জমীদারী নবকুমারকে দিতে আদেশ দিয়াছিলেন। সজাকে কোন বিষয় বঝোইয়া দেওয়া কঠিন ছিল না, কানঙ্গ মহাশয় যাহা বুঝাইলেন, সবাদার তাহাই বুঝিলেন: এফানের আবেদন ফাঁসিয়া গেল। এফান রোষে নতশির হইয়া রহিলেন, তাঁহার দক্ষিণ হস্তে নরেন্দ্র দণ্ডায়মান হইয়া কানঙ্গ মহাশয়ের দিকে তীব্রদটি করিতেছিলেন। সবাদার শেষে বলিলেন-এফানখাঁ ! সযর্ণ যে রশিম জগতে দান করেন তাহা ফিরাইয়া লন না, জমীদারী স্বয়ং দান করিয়া ফিরাইয়া লওয়া রাজধৰ্ম্ম নহে। কিন্তু বীরেন্দ্রের বালক তেজস্ব দেখিতেছি, বীরেন্দ্রের মত যাদ্ধব্যবসায় শিক্ষা করকে, অবশ্যই উৎকৃষ্ট পরস্কার ও অন্য জমীদারী এনাম পাইবে । সভাস্থ সকলে "কেরামৎ” “কেরামৎ" বলিয়া সবাদারের কথার প্রশংসা করিল; এফান অগত্যা সুতু মত ক চ ন জে কে কি কি বলা মাতে লাগলেন । సిడ