পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Նլն বুমেশচন্দ্র তৃতীয় বাষিক শ্রেণীতে উঠিয়া বন্ধবের সহপাঠী বিহারীলাল গপ্তের সহিত এমন কতকগুলি বিষয় অধ্যয়ন করিতে আরম্ভ করেন যাহাতে ঐ পরীক্ষায় সাফল্য লাভ সহজ , হইয়াছিল। ৰিলাত মাত্রা : রমেশচন্দ্র ১৮৬৮ সনে ৩রা মাচ্চ বিহারীলাল গুপ্ত ও সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আত্মীয়স্বজন প্রায় সকলেরই অগোচরে বিলাত যাত্রা করেন। উদ্দেশ্য— সিবিল সাবিস পরীক্ষা দান। এই উপলক্ষে “অমতবাজার পত্রিকা" (১২ই মাচ্চ, ১৮৬৮ খঃ অব্দ) লেখেন : “বিগত ৩রা মাচ্চ কলিকাতা হইতে ৩টি যবেক ইংলন্ডে যাত্রা করিয়াছেন। সিবিল সরবিস পরীক্ষা দেওয়াই তাঁহাদের উদ্দেশ্য। ইহাদের মধ্যে সরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় কলিকাতার প্রসিদ্ধ ডাক্তার শ্রীযুক্তবাব দরগাচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয়ের পত্র, তিনি এই বৎসর বি. এ. পরীক্ষায় উত্তীণ হইয়াছেন। অনেক দিন পাব হইতেই তিনি সিবিল সরবিস পরীক্ষার নিমিত্ত চেস্টা করিতেছেন। ডবটন কলেজে লাটিন ভাষা এক প্রকার উত্তম রাপেই তিনি শিক্ষা করিয়াছেন; অপরাপর প্রয়োজনীয় বিদ্যাভ্যাসে যত্নের ক্রটি করেন নাই। বাঞ্ছিত ফললাভে কতদরে কৃতকায্য হন জানি না। অপর দুইটির নাম রমেশচন্দ্র দত্ত ও বিহারীলাল গুপ্ত; ইহারা প্রেসিডেনসি কলেজের ৪থ বাষিক শ্রেণীর ছাত্র। এই দুই বন্ধ গুপ্তভাবে গত বৎসরারম্ভ হইতেই ফরাসী ও সংস্কৃত ভাষা এবং অন্যান্য অবশ্য প্রয়োজনীয় বিষয় শিক্ষা করিতেছিলেন। আমরা শুনিলাম রমেশচন্দ্র আপনার নামে কোন ব্যাকে গচ্ছিত টাকা লইয়া গিয়াছেন, (এবং বোধ হয়) সরেন্দ্রবাব বিহারীবাবরে ব্যয়ের ভার লইয়াছেন। রমেশবাব ও বিহারীবাব গুপ্তভাবে গিয়াছেন বলিলেও বলা যায়। বিহারীর পিতা তাঁহাদের গমন বক্তান্ত শুনিয়া ডায়মণ্ড হারবার পর্য্যন্ত গিয়াছেন, কোনক্রমে স্বপত্রকে ফিরাইয়া আনিতে পারিলেন না। অবশেষে এই বলিয়া ফিরিয়া আসিলেন বাবা! সব করো কেবল বিবি বিয়ে করো না। আমাদের ঐকান্তিক ইচ্ছা যে, ই হারা পরীক্ষোত্তীর্ণ হইয়া দেশের মুখ উজদল করন" কিন্তু মনমোহনবাবরে বিষয় মনে হইলে বোধ হয় না যে, ইহাদের মনোবাঞ্ছা সহজেই সিদ্ধ হইবে।” রমেশচন্দ্রের বিলাত গমনের বিষয় একমাত্র তাঁহার অগ্রজ যোগেশচন্দ্র দত্ত জানিতেন। তিনি গোপনে অর্থ সংগ্ৰহ করিয়া দিয়া ভ্রাতার বিলাত গমনে সহায়তা করিয়াছিলেন। সিবিল সাৰিস পরীক্ষা : রমেশচন্দ্র বিলাতে পেশছিয়াই সিবিল সাবিস পরীক্ষার জনো প্রস্তুত হইতে লাগিলেন। তিনি এই সময় গভীর অধ্যয়নে মনোনিবেশ করেন। ১৮৬৯, জন মাসে সিবিল সাবিস প্রতিযোগিতা পরীক্ষা গহীত হয়। ফল প্রকাশিত হইলে দেখা গেল রমেশচন্দ্র উত্তীণ ছাত্রদের মধ্যে তৃতীয় স্থান অধিকার করিয়াছেন। এবারে সিবিল সাবিস శా కాగా కా ইহাদের মধ্যে মাত্র পঞ্চাশ জনকে নিব্বাচিত করিবার কথা ছিল । এই পরীক্ষা ছিল প্রাথমিক। শেষ পরীক্ষা গহীত হয় ১৮৭১ সনের মাঝামাঝি। কবৎসরই রমেশচন্দ্র গভীর অধ্যয়ন ও অনুশীলনে ব্যাপাত ছিলেন। এই পরীক্ষায় রমেশচন্দ্র আটচল্লিশ জন উত্তীণ ও নিব্বাচিত প্রাথীর মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করিলেন। এইবারে মোট নির্বাচিত সিবিল সাবিস কলমীদের মধ্যে ছিলেন চারিজন ভারতীয়--রমেশচন্দ্র ও তাঁহার বন্ধদ্বয় ব্যতিরেকে বোম্বাইনিবাসী শ্রীপৎ বাবাজী ঠাকুর। ইহার পর রমেশচন্দ্র ব্যারিস্টারী পরীক্ষা দিয়াও কৃতিত্বের সহিত উত্তীণ হন। তিনি ১৮৭১ সনে সেপ্টেম্বর মাসে বন্ধদ্বয়ের সঙ্গে সবদেশে ফিরিয়া আসেন। দেশবাসীরা নবাগত সিবিলিয়ানদের স্বাগত করিবার জন্য পরবত্তীর্ণ অক্টোবর মাসে একটি সমবদ্ধনা সভার অনুষ্ঠান করেন। সভার উদ্যোক্তাদের মধ্যে ছিলেন পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, কেশবচন্দ্র সেন, কিশোরীচাঁদ মিত্র প্রমুখ সমাজ-নেতৃবগ । উত্তরপাড়া হিতকরী সভাও তাহাদের অভিনন্দনের যথোচিত আয়োজন করিলেন। হিতকরী সভা প্রদত্ত অভিনন্দনের উত্তরে নিজের ও বন্ধদের পক্ষে রমেশচন্দ্র একটি নাতিদীঘ বক্তৃতা করেন। বক্তৃতায় তিনি এই মৰ্ম্মেম বলেন যে, তাহারা এখনও সবদেশ-সেবার কোন প্রমাণ দিতে পারেন নাই বটে, তবে তাঁহারা নিজ নিজ কাস"দ্বারা স্বদেশের খানিকটা উন্নতি সাধন করিতে পারবেন বলিয়া আশা পোষণ করেন। তিনি সবদেশবাসীদের প্রতি আবেদন জানান যেন তাঁহারা অধিক সংখ্যায় বিলাতে গিয়া সিবিল সাবিস