পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/২২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অলপদিন মধ্যে বিজয়পরের অধীনস্থ অনেকগুলি দাগ হস্তগত করিয়া শিবজী অবশেষে একটী অতিশয় দগম পৰ্বতদগে লইবার মানস করিলেন। তিনি কবে কোন দাগ আক্রমণ করিবেন, পাবে কাহাকেও তাহার সংবাদ দিতেন না, নিজের সৈন্যেরাও পাবে কিছুমার ੋਣ ਗਿਚ ਸ਼ਾ: দিবাভাগে সেই দাগ হইতে পাঁচ-ছয় ক্রোশ দরে জয়সিংহের শিবিরের নিকটেই তাঁহার শিবির ছিল, সায়ংকালে এক সহস্র মাউলী ও মহারাষ্ট্ৰীয় সেনাকে প্রস্তুত হইতে কহিলেন, এক প্রহর রজনীর সময় গভীর অন্ধকারে প্রকাশ করিলেন যে, রন্দ্রমন্ডল দাগ আক্রমণ করিবেন । নিঃশব্দে সেই এক সহস্ৰ সেনাসমেত দলগাভিমুখে গমন করিলেন। অন্ধকার নিশীথে নিঃশব্দে দগতলে উপস্থিত হইলেন। চারিদিকে সমভূমি, তাহার মধ্যে একটী উচ্চ পর্বতশৃঙ্গের উপর রুদ্রমণ্ডল দাগ নিমিত হইয়াছে। পৰ্বতে উঠিবার একমাত্র পথ আছে, এক্ষণে যন্ধেকালে সেই পথ রুদ্ধ হইয়াছে। অন্যান্য দিকে উঠা অতিশয় কষ্টসাধ্য, পথ নাই, কেবল জঙ্গল ও শিলারাশি পরিপন্ণ। শিবজী সেই কঠোর দগম স্থান দিয়া সেনাগণকে পৰ্বত আরোহণ করিতে আদেশ দিলেন, তাঁহার মাউলী ও মহারাষ্ট্ৰীয় সেনা যেন করিতে লাগিল। কোন স্থানে দাঁড়াইয়া, কোন স্থানে বসিয়া, কোথাও বক্ষের ডাল ধরিয়া ল’বমান হইয়া, কোথাও লম্বফ দিয়া সৈন্যগণ অগ্রসর হইতে লাগিল, মহারাষ্ট্ৰীয় সেনা ভিন্ন আর কোন জাতীয় সৈন্য এরুপ পৰ্বত আরোহণে সমথ কিনা সন্দেহ। অদ্ধেক পথ উঠিলে পর শিবজী সহসা দেখিলেন, উপরে দাগ-প্রাচীরের উপর কতকগুলি মশালের আলোক জলিল। চিস্তাকুল হইয়া ক্ষণেক দণ্ডায়মান রহিলেন, শরীরা কি তাঁহার আগমন-বাত্তা শুনিতে পাইয়াছে ? নচেৎ প্রাচীরের উপর এরপে আলোক জনলিল কেন ? আলোকের কিরণ দাগের নীচে পৰ্য্যন্ত পতিত হইয়াছে, যেন দগাবাসিগণ শক্রকে প্রতীক্ষা করিয়াই এই আলোক জালিয়াছে, যেন অন্ধকারে আবত হইয়া কেহ দগে আক্রমণ করিতে না পারে। শিবজী নিজ সৈন্যগণকে আরও সতকভাবে ব্যক্ষ ও শৈলরাশির অন্তরাল দিয়া ধীরে ধীরে আরোহণ করিতে আদেশ করিলেন। নিঃশব্দে মহারাষ্ট্ৰীয়গণ সেই পৰ্বতে আরোহণ করিতে লাগিল, যেখানে বড় ব্যক্ষ, যেখানে ঝোপ, যেখানে শৈলরাশি সেই সেই স্থান দিয়া ব্যকে శా শব্দ মাত্র নাই, অন্ধকারে নিঃশব্দে শিবজী সেই পব্বতে উঠিতে লাগলেন । ক্ষণেক পর মহারাষ্ট্ৰীয়গণ একটী স্থানের নিকট আসিয়া পড়িল, উপর হইতে আলোক তথায় পল্টরপে পতিত , সেস্থান দিয়া সৈন্য যাইলে উপর হইতে দেখা যাওয়ার অতিশয় সম্ভাবনা। শিবজী পুনরায় দণ্ডায়মান হইলেন, বক্ষের অন্তরালে দণ্ডায়মান হইয়া এদিকে ওদিকে দেখিতে লাগিলেন। সম্মমখে দেখিলেন প্রায় শত হস্ত পরিমাণ স্থানে বক্ষমাত্র নাই, পরে পুনরায় বক্ষশ্রেণী রহিয়াছে। এই শত হস্ত কিরাপে যাওয়া যায় ? পাশ্বে" দেখিলেন, যাইবার কোন উপায় নাই, নীচে দেখিলেন, অনেক দর আসিয়াছেন, পনরায় নীচে যাইয়া অন্যপথ অবলম্বন করিলে দাগে আসিবার পর্বেই প্রাতঃকাল হইতে পারে। শিবজী ক্ষণেক নিঃশব্দে দণ্ডায়মান রহিলেন, পরে বাল্যকালের সহৃেদ বিশ্বাসী মাউলী যোদ্ধা তন্নজীমালশ্রীকে ডাকাইলেন, দুইজনে সেই বক্ষের অন্তরালে দণ্ডায়মান হইয়া ক্ষণেক অতি মদস্বেরে পরামর্শ করিতে লাগিলেন। ক্ষণেক পর তন্নজী চলিয়া যাইল, শিবজী অপেক্ষা করিতে লাগিলেন, তাঁহার সমস্ত সৈন্য নিঃশব্দে অপেক্ষা করিতে লাগিল । অদ্ধ দন্ডের মধ্যে তন্নজী ফিরিয়া আসিল। শিবজীর নিকট আসিয়া অতি মদস্বেরে কি কহিল, শিবজী ক্ষণমাত্র চিন্তা করিয়া বলিলেন,—তাহাই হউক, অন্য উপায় নাই। বষ্টির জল অবতরণে এক স্থান ধৌত ও ক্ষত হইয়া প্রণালীর ন্যায় হইয়াছিল। দই পাশ্ব উচ্চ, মধ্যস্থল গভীর, সেই প্রণালী দিয়া বনকে হাঁটিয়া যাইলে সম্ভবতঃ দুই পাশ্বে’ উচ্চ পাড় থাকায় শত্ররা দেখিতে পাইবে না, এই পরামশ স্থির হইল। সমস্ত সৈন্য ধীরে ধীরে সেই প্রণালীর মধ্য দিয়া পৰ্বত আরোহণ করিতে লাগিল। শত শত শিলাখণ্ডের উপর দিয়া নিস্তন্ধ অন্ধকার রজনীতে সহস্র সেনা নিঃশব্দে পৰ্ব"ত আরোহণ করিতে লাগিল । অচিরাং উপরিস্থ বক্ষশ্রেণীর মধ্যে যাইয়া প্রবেশ করিল, শিবজী মনে মনে ভবানীকে ধন্যবাদ করিলেন। Stfసి