পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/২৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

; :- i ག ستنضمد. সময়ের বীরত্বের কথা স্মরণ করিব, কেবল এই উদ্দেশ্যে লেখনী ধারণ করিয়াছি। যদি সেই সমস্ত কথা স্মরণ করাইতে সক্ষম হইয়া থাকি তবেই যত্ন সফল হইয়াছে, নচেৎ আমার প্রস্তকগুলি দরে নিক্ষেপ কর, লেখক তাহাতে ক্ষম হইবে না। j শাস্ত কাননে পবিত্র প্রাণকথা ও সঙ্গীত রঘুনাথের উত্তপ্ত ললাটে বারিবষপ করিতে লাগিল, উদ্বিগ্ন হৃদয়ে শান্তি সেচন করিতে লাগিল। হতভাগার উন্মত্ততা ক্রমে হ্রাস পাইল, সেই মহৎ কথার নিকট আপনার শোক ও দুঃখ কি অকিঞ্চিৎকর বোধ হইল! আপনার মহৎ উদ্দেশ্য ও বীরত্ব কি ক্ষুদ্র বোধ হইল! ক্ৰমে চিন্তাহারিণী নিদ্রা রঘুনাথকে অঙ্কে গ্রহণ করিলেন। রঘুনাথের শ্রান্ত অবসন্ন শরীর সেই বক্ষমলে শায়িত হইল। রঘুনাথ স্বপ্ন দেখিতে লাগিলেন। আজি কিসের স্বপ্ন ? আজি কি গৌরবের স্বপ্ন দেখিতেছেন ? দিন দিন পদোন্নতি, দিন দিন যশোবিস্তারের স্বপ্ন দেখিতেছেন ? হায় ! রঘুনাথের জীবনের সে স্বপ্ন ভগ্ন হইয়াছে, সে চিন্তা শেষ হইয়াছে, মরীচিকাপণ সংসারের সে মরীচিকা বিলুপ্ত হইয়াছে। রঘুনাথ কি যুদ্ধক্ষেত্রের স্বপ্ন দেখিতেছেন ? শরকে বিনাশ করিতেছেন? দগ'জয় করিতেছেন ? যোদ্ধার কাব্য করিতেছেন ? রঘুনাথের সে উদ্যম শেষ হইয়াছে, সে স্বপ্নও বিলুপ্ত হইয়াছে। একে একে যৌবনের উদ্যমগুলি বিলুপ্ত হইয়াছে, আশাপ্রদীপ নিৰ্বাণ হইয়াছে, এই অন্ধকার রজনীতে শ্রান্ত বন্ধনহীন যুবকের বহুদিনের কথা পন্বেজীবনের সমতির ন্যায় জাগরিত হইয়াছে। শোকভারে হৃদয় আক্রান্ত হইলে, আশা ও সুখ আমাদের নিকট বিদায় লইলে বন্ধহীন জনের যে কথা স্মরণ হয়, রঘুনাথ সেই স্বপ্ন দেখিতেছিলেন। স্নেহময়ী মাতার স্নেহসিক্ত মুখখানি মনে জাগরিত হইল, পিতার দীঘ* অবয়ব ও প্রশস্ত ললাট মনে হইল, বাল্যকালে সেই দর সৰ্য্যেমহলে ক্রীড়া করিতেন, হাস্য-ধননিতে চারিদিক প্রতিধৰনিত করিতেন, সেই কথা সমরণ হইল। সঙ্গে সঙ্গে বাল্যকালের সহচরী, শান্ত, ধীর প্রাণের ভগিনী লক্ষয়ীকে মনে পড়িল । আহা! সে স্নেহময়ী ভগিনীকে কি আর জীবনে দেখিতে পাইবেন ? আজ সে সোনার সংসার কোথায়, সে প্রফুল্ল সখের জগৎ কোথায়, সে হৃদয়ের সহোদরা কোথায় ? নিদ্রিতের মনুদিত নয়ন হইতে এক বিন্দ অশ্র ভূমিতে গড়াইয়া পড়িল । নিদ্রিত রঘুনাথ সেই স্নেহময়ীর মুখখানি চিন্তা করিতে করিতে নয়ন উন্মীলিত করিলেন। কি দেখিলেন ? বোধ হইল যেন স্বয়ং লক্ষয়ী ভ্রাতার শিরোদেশ আপন অঙ্কে স্থাপন করিয়া বসিয়া রহিয়াছেন, কোমল শীতলহস্ত ভ্রাতার উষ্ণ ললাটে স্থাপন করিয়া হৃদয়ের উদ্বেগ দর করিতেছেন, সহোদরা স্নেহপণ নয়নে যেন সহোদরের মুখের দিকে এক দটিতে চাহিয়া রহিয়াছেন। আহা! বোধ হইল যেন শোকে বা চিস্তায় লক্ষয়ীর প্রফুল্ল মুখখানি ঈষৎ শতক হইয়াছে, নয়ন দুইটী সেইরাপ স্থির, প্রশস্ত, স্নিগ্ধ, কিন্তু চিস্তার আবাসস্থান ! রঘুনাথ নয়ন মনুদিত করিলেন, আর একবিন্দ আশ্রম বর্ষণ করিলেন, বলিলেন,—ভগবন, অনেক সহ্য করিয়াছি, কেন ব্যথা আশায় হৃদয় ব্যথিত করিতেছ? আমি যেন উন্মত্ত না হই। ষেন কোমল হস্তে রঘুনাথের আশ্রমবিন্দর বিমুক্ত হইল। রঘুনাথ পনেরায় নয়ন উন্মীলিত করিলেন, এ স্বপ্ন নহে, প্রাণের সহোদরাই তাহার মস্তক অঙ্কে ধারণ করিয়া সেই বক্ষমলে বসিয়া রহিয়াছেন। রঘুনাথের হৃদয় আলোড়িত হইল ; তিনি লক্ষয়ীর হাত দুইটী আপন তপ্ত হৃদয়ে স্থাপন করিয়া সেই স্নেহপণ মাখের দিকে চাহিলেন; তাঁহার বাক্যস্ফীত্তি হইল না; নয়ন হইতে দরবিগলিত ধারা বাঁহতে লাগিল। অবশেষে আর সহ্য করিতে না পারিয়া সেই তরুণ যোদ্ধা উচ্চৈঃস্বরে রোদন করিয়া উঠিলেন। বলিলেন,—লক্ষিস ! লক্ষিম! তোমাকে কি এ জীবনে আবার দেখিতে পাইলাম ? অন্য সখে দরে হউক, অন্য আশা দরে হউক, লক্ষিম! তোমার হতভাগা ভ্রাতাকে নিকটে স্থান দিও, সে এ জীবনে আর কিছন চাহে না । লক্ষীও শোক সংবরণ করিতে পারলেন না, ভ্রাতার হৃদয়ে আপন মুখ লকোইয়া একবার প্রাণ ভরিয়া কাঁদিলেন। আহা! এ ক্রদনে যে সখে, জগতে কি রত্ন আছে, সবগে কি সখে আছে যাহা অভাগাগণ সে সখের নিকট তুচ্ছ জ্ঞান না করে ? পরপরকে বহুদিন পর পাইয়া পরপরে অনেকক্ষণ বাকশন্য হইয়া রহিলেন, বহুদিনের ఫి0చి