পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/২৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

अक्ष्ाब्राख्ने छौबन-धक्काएछ ভোগ করি, যদি একদিন দুঃখ পাই তাহা কি সহ্য করিতে বিমুখ হইব ? মানবজন্মই দুঃখময়, যদি আমরা দুঃখ সহ্য না করিব, তবে কে করিবে ? সদিন দুদিন সকলেরই আছে, দুদিনে যেন আমরা সেই বিধাতার নাম করিয়া নিজ শোক বিস্মত হই। তিনিই একদিন পিত্রালয়ে আমাদের সখে দিয়াছিলেন, তিনিই অদ্য কন্ট দিয়াছেন, তিনিই পনরায় সে কষ্ট মোচন করিবেন। ভাই ! এ নৈরাশ দরে কর, এরপ অবস্থায় থাকিলে শরীর কতদিন থাকিবে ? আহার-নিদ্ৰা ত্যাগ করিলে মনুষ্য-জীবন কতদিন থাকে ? রঘুনাথ। থাকিবার আবশ্যক কি ? যে দিন বিদ্রোহী বলিয়া সৈনিকের নামে কলঙ্ক পড়িল, সেই দিন সৈনিকের জীবন গেল না কি জন্য ? লক্ষী। তোমার ভগিনী লক্ষয়ীকে চিরদঃখিনী করবে এই কি ইচ্ছা ? দেখ ভাই, আমার এ জগতে আর কে আছে ? পিতা নাই, মাতা নাই, জগৎসংসারে কেহ নাই। তুমিও কি দুঃখিনী লক্ষীর প্রতি সমস্ত মমতা ভুলিলে ? বিধাতা কি এ হতভাগিনীর উপর একেবারে বিমুখ হইলেন ? রঘুনাথ। লক্ষিম! তুমি আমাকে ভালবাস তাহা জানি, তোমাকে যেদিন কট দিব সেদিন যেন ঈশ্বর আমার প্রতি বিমুখ হন। কিন্তু ভগিনি! এ জীবনে আর আমার সুখ নাই। তুমি সত্ৰীলোক, সৈনিকের শোক বুঝিবে কিরাপে ? জীবন অপেক্ষা আমাদিগের সনাম প্রিয়, মৃত্যু অপেক্ষা কলঙ্ক ও অপযশ সহস্ৰগণে কটকর! সেই কলঙ্কে রঘুনাথের নাম কলঙ্কিত হইয়াছে ! লক্ষয়ী। তবে সেই কলঙ্ক দরে করিবার চেটায় কেন বিমুখ হও ? মহানুভব শিবজীর নিকট যাও, তাঁহার ক্রোধ দরে হইলে তিনি অবশ্য তোমার কথা শুনিবেন, তোমার দোষ নাই, বুঝিবেন। রঘুনাথ উত্তর করিলেন না, কিন্তু তাঁহার মুখমণ্ডল রক্তবর্ণ হইয়া উঠিল, চক্ষ হইতে অগ্নিকণা বাঁহগাত হইতে লাগিল। বৃদ্ধিমতী লক্ষী বুঝিলেন, পিতার অভিমান, পিতার দপ পত্রে বক্তমান। তিনি প্রাণ থাকিতে এরপে আবেদন করিবেন না। তীক্ষা বৃদ্ধিমতী বুঝি না। কিন্তু যদি শিবজীর নিকট যাইতে অসম্মত হও, কাৰ্য্য দ্বারা কেন আপন যশ রক্ষা কর না ? পিতা বলিতেন, “সেনার সাহস ও প্রভুভক্তি কায্যে প্রকাশ হয়।” যদি বিদ্রোহী বলিয়া কেহ তোমাকে সন্দেহ করিয়া থাকে, অসিহন্তে কেন সে সন্দেহ খণ্ডন কর না ? উৎসাহে রঘুনাথের নয়ন প্রজবলিত হইল। তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন,—কিরাপে ? লক্ষী। শনিয়াছি শিবজী দিল্লী যাইতেছেন, তথায় সহস্র ঘটনা ঘটিতে পারে, দঢ়প্রতিজ্ঞ সৈনিকের আত্মপরিচয় দিবার সহস্র উপায় থাকিতে পারে। আমি সত্ৰীলোক, আমি কি জানি বল ? তোমার পিতার ন্যায় সাহস, তাঁহারই ন্যায় বীরপ্রতিজ্ঞা করিলে তোমার কোন উদ্দেশ্য না সফল হইতে পারে ? নিতান্ত অনভিজ্ঞা নহেন। যে ঔষধি আজি রঘুনাথের হৃদয়ে ঢালিয়া দিলেন, তাহাতে মহেত্তে"মধ্যে শোক সন্তাপ দরে হইল, সৈনিকের হৃদয় পত্ৰবাবৎ উৎসাহে সফীত হইয়া উঠিল । রঘুনাথ অনেকক্ষণ চিন্তা করিলেন, তাঁহার নয়ন ও মুখমণ্ডল সহসা নবগৌরব ধারণ করিল। অনেকক্ষণ পরে বলিলেন;–লক্ষিম! তুমি সত্ৰীলোক, কিন্তু তোমার কথা শুনিতে শুনিতে আমার মনে নতন ভাবের উদয় হইল। আমার হৃদয় উৎসাহশন্যে নহে, ভগবান সহায় হউন, রঘুনাথ বিদ্রোহী নহে, ভীর নহে, একথা এখনও প্রচার হইবে। কিন্তু তুমি বালিকা, তোমার নিকট এ সমস্ত কহি কেন, তুমি আমার হৃদয়ের ভাব কি বুঝিবে ? লক্ষয়ী ঈষৎ হাসিলেন, ভাবিলেন-রোগ নির্ণয় করিলাম আমি, ঔষধি দিলাম আমি, তথাপি কিছ বুঝি না ? প্রকাশ্যে বলিলেন,—ভাই, তোমার উৎসাহ দেখিয়া আমার প্রাণ জড়াইল। তোমার মহৎ উদ্দেশ্য আমি কিরাপে বুঝিব ? কিন্তু যাহাই হউক, তোমার কনিষ্ঠা ভগিনী যতদিন বাঁচবে, তুমি পর্ণমনোরথ হও, জগদীশ্বরের নিকট এই প্ৰাথনা করবে। রঘুনাথ। আর লক্ষিী! আমি যতদিন বাঁচিব, তোমার স্নেহ, তোমার ভালবাসা কখনও বিস্মত হইব না। ŞO6