পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/২৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

अशाब्राच्छ्रे अौवन-श्रछाङ রহমৎখাঁ বলিলেন,-আমার মরণের জন্য আক্ষেপ নাই, কিন্তু আপনি শত্র হইয়া আমার প্রতি যেরপে সদাচরণ করিয়াছেন তাহার পরিশোধ করিতে পারিলাম না, এই আক্ষেপ রহিল। কি জিজ্ঞাসা করিবেন করন, আপনার নিকট আমার অবক্তব্য কিছুই নাই। জয়সিংহ। রুদ্রমন্ডল আক্রমণের পর্বে একজন শিবজীর সেনানী আপনাকে সংবাদ দিয়াছিল। সে কে আমরা জানি না, আমার বোধ হয় একজন অন্যায়রপে দণ্ডিত হইয়াছে। রহমৎ । আমি জীবিত থাকিতে সে নাম প্রকাশ করিব না বলিয়া প্রতিজ্ঞা করিয়াছিলাম । রাজপত! আপনার ভদ্রাচরণে আমি অতিশয় সম্মানিত হইয়াছি, কিন্তু পাঠান প্রতিজ্ঞা লঙ্ঘন করিতে অশক্ত। জয়সিংহ। যোদ্ধা! আপনার প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করিতে আমি বলিতেছি না, কিন্তু যদি কোন নিদর্শন থাকে, তাহা আমাকে দিতে আপত্তি আছে ? রহমৎ। প্রতিজ্ঞা করন, সে নিদশন আমার মৃত্যুর পর্বে পাঠ করিবেন না ? জয়সিংহ তাহাই প্রতিজ্ঞা করিলেন, তখন রহমৎখাঁ তাঁহাকে কতকগুলি কাগজ দিলেন। রহমতের মৃত্যুর পর রাজা জয়সিংহ সেই সমস্ত পত্রাদি পাঠ করিয়া দেখিলেন, বিদ্রোহী চন্দ্ররাও । চন্দ্ররাও রহমৎখাঁকে বহস্তলিখিত পত্র পাঠাইয়াছিলেন, তাহা রাজা পড়িলেন, সে সম্বন্ধে অন্যান্য যে যে কাগজ ছিল তাহাও পাঠ করিলেন, চন্দ্ররাও পাঠানদিগের নিকট যে পারিতোষিক পাইয়াছিলেন তাহার প্রাপ্তিস্বীকার পয্যন্ত রাজা জয়সিংহ দেখিলেন। জয়সিংহের মৃত্যুর দিনে তাঁহার মন্ত্রী সেই সমস্ত কাগজ শিবজীকে দিয়াছিলেন। বিচারকাযে অধিক সময় আবশ্যক হইল না। শিবজীর চিরবিশ্বস্ত মন্ত্রী রঘুনাথ ন্যায়শাস্ত্রী একে একে সেই পত্রগুলি পাঠ করিতে লাগিলেন, যখন পাঠ সমাধা হইল তখন রোষে সমস্ত সেনানীগণ গজন করিয়া উঠিলেন। চন্দ্ররাও বিদ্রোহী, স্বয়ং শত্র:দিগকে সংবাদ দিয়া পারিতোষিক গ্রহণ করিয়াছিলেন, সেই দোষে নিন্দোষী নিকলঙ্ক বীর রঘুনাথের প্রাণদন্ডের প্রয়াস পাইয়াছিলেন, এ কথা সকলে জানিতে পারিয়া রোষে হাঙ্কার করিয়া উঠিলেন! তখন শিবজী বলিলেন,—পাপাচারী বিদ্রোহী, তোর মৃত্যু সন্নিকট, তোর কিছু বলিবার আছে ? মৃত্যুসময়েও চন্দ্ররাও নিভীক, তাঁহার দমদমনীয় দপ ও অভিমান এখনও পর্বোবৎ । বলিলেন--আমি আর কি বলিব ? আপনার বিচার ক্ষমতা প্রসিদ্ধ ! একদিন এই দোষে রঘুনাথকে দন্ড দিয়াছিলেন, আদ্য আমাকে দন্ড দিতেছেন, আমার মৃত্যুর পর আর একদিন আর একজনকে দণ্ড দিবেন, তখন জানিবেন চন্দ্ররাও এ বিষয়ের বিন্দবিসগও জানে না, এ সমস্ত প্রমাণ জাল । এই বিদ্রপে শিবজী মৰ্ম্মমন্তিক ক্রুদ্ধ হইয়া আদেশ করিলেন,—জল্লাদ, চন্দ্ররাওয়ের দই হস্ত ছেদন কর, তাহা হইলে আর ঘসে লইতে পারবে না। তাহার পর তপ্ত লৌহ দ্বারা ললাটে বিশ্বাসঘাতক অঙ্কিত করিয়া দাও, তাহা হইলে আর কেহ বিশ্বাস করিবে না। জল্লাদ এই নৃশংস আদেশ পালন করিতে যাইতেছিল, এরপে সময় রঘুনাথ দণ্ডায়মান হইয়া কহিলেন,—মহারাজ ! আমার একটী নিবেদন আছে। শিবজী। রঘুনাথ! এ বিষয়ে তোমার নিবেদন আমরা অবশ্য শুনিব, কেন না এই পামর তোমারই প্রাণনাশের যত্ন করিয়াছিল ; তাহার কি প্রতিহিংসা লইতে ইচ্ছা কর, নিবেদন কর । রঘুনাথ। মহারাজের অঙ্গীকার অলঙ্ঘ্য, আমি এই প্রতিহিংসা যাদ্ধা করি যে চন্দ্ররাওয়ের কেশাগ্রও কেহ পশ" না করে ;-অনুগ্রহ প্রকাশ করিয়া বিনা দণ্ডে মুক্তি দিন। সভাস্থ সকলে বিসিমত ও স্তব্ধ! শিবজী ক্রোধ সম্বরণ করিয়া কহিলেন—তোমার প্রতি যে অত্যাচার করিয়াছিল, তোমার অনুরোধে সেজন্য চন্দ্ররাওকে ক্ষমা করিলাম। রাজবিদ্রোহাচরণের শাস্তি দিবার অধিকারী রাজা। সে শাস্তির আদেশ করিয়াছি, জল্লাদ, আপন কায্য কর। রঘুনাথ। মহারাজের বিচার অনিন্দনীয়, কিন্তু দাস প্রভুর নিকট ভিক্ষা চাহিতেছে, চন্দ্ররাওকে বিনা দণ্ডে মুক্তিদান করন। শিবজী। এ ভিক্ষাদানে আমি অসমথ", রঘুনাথ তোমাকে এবার ক্ষমা করিলাম, অন্যকে এতদরে ক্ষমা করিতাম না। শিবজীর আদেশের উপর কথা কহিও না।

  • 8Ꮻ: