পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৩৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সংসার আমি পুনরায় মনষ্যোচিত স্নেহ ও প্রীতি লাভ করিতে পারি। । করিতে করিতে শরৎ বাড়ী যাইলেন। । এই প্রকার নানারপে চিস্তা অষ্টম পরিচ্ছেদ : বিন্দর বন্ধগণ পরদিন প্রত্যুষে বিন্দ গাত্রোথান করিয়া ঘরদ্বার প্রাঙ্গণ ঝাঁট দিলেন এবং গহের পশ্চাতের পাকুরে বাসন মাজিতেছিলেন, এমন সময়ে বাহিরের স্বারে কে আঘাত করিল। হেমচন্দ্র ও সন্ধা তখনও উঠেন নাই, অতএব বিন্দ বাসন রাখিয়া শীঘ্ৰ আসিয়া কবাট খালিয়া দিলেন, দেখিলেন সনাতনের সন্ত্রী। বিন্দ বাল্যাবস্থায় তাহাকে কৈবত্ত দিদি বলিয়া ডাকিতেন, এখনও সেই নাম ভুলেন নাই। বলিলেন, “কি কৈবত্ত দিদি, এত সকালে কি মনে করে ? তোর হাতে ও কি ও ?” সনাতনের পত্নী। না, কিছ নয় দিদি, মনে করন আজ সকালে তোমাদের দেখে যাই, আর সন্ধাদিদি চিনিপাতা দৈ বড় ভালবাসে, তাই কাল রেতে দৈ পেতে রেখেছিনা, সন্ধাদিদির জন্যে এনেছি। সন্ধাদিদি উঠেছে ? বিন্দন। না, এখনও উঠেনি। তোরা বোন গরীব লোক, রোজ রোজ দধে দৈ দিস কেন বল দেখি ? তোরা এত পাবি কোথা থেকে বোন ? স-প। না, এ আর কি দিদি, বাড়ীর গরর দধে বৈ ত নয়, তা দু এক দিন আননই বা। গর ও তোমাদের, আমাদের ঘরদেরও তোমাদের, তোমাদের দুটো খেয়েই আমরা আছি, তা তোমাদের জিনিস তোমরা খাবে না ত কে খাবে ? বিন্দর। তা দে বোন, এখন শিকেয় তুলে রেখে দি, ভাত খাবার সময় এক সঙ্গে খাব এখন। কৈবত্ত দিদি, তুই বেশ দৈ পাতিস, সন্ধা তোর দৈ বড় ভালবাসে, ও কি লো ? তোর চোখে জল কেন ? তুই কাঁদছিস নাকি ? সত্য সত্যই সনাতনের পত্নী ঝর ঝর করিয়া চক্ষের জল ফেলিয়া উহাহো করিয়া কাঁদিতে বসিয়াছিল। সনাতন অনেক কট করিয়া আপন প্রেয়সী গহিণীর শরীরের অনরপে কাপড় যোগাইতেন, কিন্তু সেই কাপড়ে অতবেঙ্গী রপেসীর বিশাল অবয়ব আচ্ছাদন করিয়া তাহার অচিলে আবার চক্ষর জল মুছিতে কুলায় না! যাহা হউক, কন্টে চক্ষের জল অপনীত হইল, কিন্তু সে ফোয়ারা একবার ছয়টিলে থামে না, কৈবত্ত-রমণী আবার উচ্চস্বরে হে: করিয়া ক্ৰন্দন আরম্ভ করিলেন । বিন্দর। বলি ও কি লো ? কাঁদছিস কেন লো ? সনাতন ভাল আছে ত ? স-প। আছে বৈ কি, সে মিনাষের আবার কবে কি হয় ? উ‘হ'হে"। বিন্দ। তোর ছেলেটী ভাল আছে ত ? স-প। তা তোমাদের আশীব্বাদে বাছা ভাল আছে। বিন্দ। তবে সন্ধ সন্ধ সকাল বেলা চখের জল ফেলছিস কেন ? কি, হয়েছে কি ? স-প। এই সকালে ঘোষেদের বাড়ী গিয়েছিন গো, সেখানে —উহ'হে । বিন্দর। সেখানে কি হয়েছে, কেউ কিছু বলেছে, কেউ গাল দিয়েছে ? স-প। না, গাল দেবে কি গো দিদি ? কারই কিছু খাই, না কারই কিছু ধারি, যে গাল দেবে। তেমন ঘর করিনি গো যে দিদি যে কেউ গাল দেবে । মিনাষে পোড়ারমুখো হোক, হতভাগা হোক, গতর খেটে খায়, আমাকে খেতে পরতে দিতে পারে, আমরা গরীবগরবো নোক, কিন্তু আপনাদের মানে আছি। গাল আবার কে দেবে গা দিদি ? বিন্দ কৃষকপত্নীর এই সবমিভক্তিমলেক এবং দপপণ কথা শুনিয়া একটা মচকে হাসিলেন, বলিলেন— * তা, তাই ত বোন, জিজ্ঞেসা করছি, তবে তুই কাঁদছিস কেন ? সনাতন কিছ বলেছে নাকি ? রমণীর বিশাল কৃষ্ণ কলেবর একবার কম্পিত হইল, নয়ন দুইটী ঘাণিত হইল, ক্ৰোধকম্পিত স্বরে যে কথাগুলি উচ্চারিত হইল, তাহার মধ্যে এই মাত্র বোধগম্য হইল— ডেকরা, পোড়ারমুখো, হতভাগা, সে আবার বলবে। তার প্রাণের ভয় নেই ? কোন মখে ○○○ ミや |