পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৩৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ज६★ाग्न কিছয় টাকা আছে কি না, সে ছেলেদের ভাল ভাল খাবার খাওয়ায়, আবার ছোটর ঘরে বোসে ছেলেদের খেতে শিখিয়ে দেয়। তারা ছোটর ঘরে বসে খায়, ছোটর ছেলেরা খেতে পায় না, ফেল ফেল করে চেয়ে থাকে। আবার ছোটর খাবারঘরের পাশেই এবার একটা নন্দমা তয়ের করেছে। ছোট কত ঝগড়া করলে, আমার ছোট দেওর আপনি বাবর কাছে নালিশ করতে গেলেন, বাবাও নিজে একদিন বাড়ী এসে তাঁর মেজো খড়ীকে বঝাতে গেলেন, তা সে কথা কি সে শনে ? মেজোর বকুনি শনে বাব ফের গাড়ী করে বাগানে পালিয়ে গেলেন, মেজো আপনি দাঁড়িয়ে মজরদের দিয়ে সেই মন্দমাটী করালেন, তবে সে দিন রাত্রে জল গ্রহণ করলেন। উমা। সাবাস মেয়ে যা হক ! কালী। বলব কি উমা, বাড়ীতে যে ঝগড়া কোঁদল হয়, তাতে ভূত ছেড়ে পালায়। তবে আমাদের সয়ে গেছে, গায়ে লাগে না। আর আমি কারো কথায় নেই, যে যা বলে চুপ করে থাকি, আবার ভুলে যাই, আমার কি বল ? বিন্দর। কালী, তোমার খড়েশ্বাশুড়ীরা ত সব বিধবা, তাদের বয়স কত হয়েছে ? কালী। বয়েস বড় জেয়াদা নয়, বাবর বয়স আর আমার বড় খড় শ্বাশুড়ীর বয়েস এক, আর মেজো ছোট বাবর চেয়ে ৫। ৭ বছরের ছোট। আমার শ্বশর বাপের বড় ছেলে ছিলেন, তিনি আজ যদি থাকতেন, তাঁর ৭০ বছর বয়েস হত। তা তিনি হবার পর প্রায় ১৫ । ১৬ বছর আর কেউ হয়নি, তার পর তাঁর তিনটী ভাই হয়। তাই যখন আমার শ্বাশুড়ীর বয়েস প্রায় ৩০ বছর, তখন আমার খড়শ্বাশুড়ীরা ছোট ছোট বোঁ, নতুন বিয়ে হয়েছে। তারই দুই এক বছর পর বাবর প্রথম বিয়ে হয়। উমা। আর কালীদিদি, তোমার পিশাশ্বাশুড়ীও ঐ বাড়ীতে থাকে না ? কালী। হাঁ, থাকে বৈ কি, দই পিশাশ্বাশুড়ী আর একজন মাশ্যশ্বাশুড়ী আছেন; তাঁরা তিনজনই বিধবা, তাঁদের ছেলে, মেয়ে, বেী, নাতি, সকলেই ঐ বাড়ীতে থাকে। আর একজন মামীশ্বাশুড়ীও আছেন, তিনি সধবা, তাঁর স্বামী পাবদেশে পদ্মাপারে চাকরী করতে গিয়েছিল, সেখানে নাকি আর একটা বিয়ে করেছে না কি করেছে, তের বছর বাড়ী আসেনি, বাড়ীতে টাকাও পাঠায় নাই, কাজেই মামী দুই ছেলেকে নিয়ে ঐখানেই আছেন, এই বাড়ীতেই সে ছেলেদের বিয়ে হয়, আজ তিন চার বছর হল । উমা। সে ছেলে দটী কেমন, লেখাপড়া শিখেছে ? কালী। ছোট ছেলেটী ভাল, ইস্কুলে লেখাপড়া করে, বড়টা লক্ষীছাড়া হয়ে গেছে। বাব সাহেবদের বোলে তাকে কি কাজ করে দিয়েছিলেন, তা সে আবার কতকগুলো টাকা নিয়ে পালায়। সবাই বললে, সাহেবরা ছেলেটাকে জেলে দেবে, কিন্তু বাব সাহেবদের অনেক বলেকয়ে ঘর থেকে লোকসান পরণ করে ছেলেটাকে রক্ষা করেন। ছেলেটা বাড়ী থাকে না, রোজ মদ খায়, যখন বাড়ী আসে, পয়সার জন্যে বোঁকে মেরে হাড় গাড়িয়ে দেয়, বৌয়ের কান্না শুনে আমাদেরও কান্না পায়। তা বোঁ পয়সা কোথা থেকে পাবে, দুই একখানা গয়নাটয়না বাঁধা রেখে দেয়, তা না হলে কি তার প্রাণ থাকত ? উমা । উঃ, তবে তোমাদের মস্ত সংসার। কালী। তাই ত বলছিলেম উমা, তোমরা বড় মানুষের ঘরের বোঁ, তিনটী জা তিনটী ঘরে থাক, শ্বাশুড়ী রান্নাবান্না দেখেন, তোমরা কাজের ঝনঝাট কি বুঝবে বল ? তোমার দেওর দজন ত গ্রামেই আছেন, তোমার স্বামী না কলকেতায় গিয়াছেন ? উমা। হ্যাঁ, এক বৎসর হল তিনি কলকেতায় আছেন, আমাকেও কলকেতায় নিয়ে যাবার জন্যে তাঁর মার কাছে লোক পাঠিয়েছিলেন, তিনিও বলেছেন, এই জ্যৈষ্ঠ কি আষাঢ় মাসে পাঠিয়ে দেবেন। কালী। হ্যাঁ, শরৎ বলছিল, তোমার স্বামী নাকি কোন বড় রাস্তার উপর মস্ত বাড়ী নিয়েছেন, অনেক টাকা খরচ করে সাজিয়েছেন : তাঁর নাকি সন্দের সাদা ঘোড়ার এক জড়ি আর কালো ঘোড়ার এক জড়ি আছে, তেমন গাড়ীঘোড়া রাজারাজড়াদেরও নেই। আবার নাকি কলকেতার বাইরে বড় বাগানু কেনবার কথা চলছে, সেই বাগানও নাকি ইন্দ্রপরেী, তেমন ফুল, তেমন ফল, তেমন পাকুর, তেমন মাবেলের মেজেওয়ালা ঘর কলকেতায়ও কম আছে। উমা তুমি বড় সখে থাকবে। ○○ 。