পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৪১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

to প্রথম সংখ্যক আশ্রিতা, যিনি চুল খালিয়া দিতেছিলেন, তিনি সময় বঝিয়া বলিলেন,— তা নয় ত কি, এই ভগবানের ইচ্ছায় আমাদের বাবরে যেমন টাকাকড়ি, ঘরসংসার, তেমন কি সকলের কপালে ঘটে ? তা নয়, ও যার যেমন কপালের লেখন। দ্বিতীয় সংখ্যক আশ্রিতা অনেকক্ষণ ক্রমাগত তেল মালিস করিতে করিতে হাঁপাইতেছিলেন। তিনি দেখিলেন, তাঁহারও একুটী কথা এই সময়ে বলিলে আশর মঙ্গলের সম্ভাবনা আছে। বলিলেন,—কেবল টাকাকড়ি কেন বল বোন, যেমন মান, তেমনি যশ, তেমনি লেখাপড়া, সাহেব মহলে কত সন্মান। লক্ষয়ী যেন ঐ খাটের খরায় বাঁধা আছে। ঈষৎ হাস্যের আলোক গিন্নীর রক্ষে বদনে লক্ষিত হইল, কথাটী তাঁহার মনের মত হইয়াছিল। একটা সদয় হইয়া সেই আশ্রিতাকে বলিলেন,—আহা! তুমি কতক্ষণ মালিস করবে গা ? তুমি হাঁপাচ্ছ যে। আর সব গেল কোথা, কাজের সময় যদি একজন লোক দেখতে পাওয়া যায়, সব রান্নাঘরের দিকে মন পড়ে আছে, তা কাজ করবে কেমন করে ? তীব্রস্বরে এই কথাগুলি উচ্চারিত হইল, দাসীতে দাসীতে এই কথা কাণাকাণি হইতে হইতে তারের খবরের ন্যায় সেই খবর রান্নাঘরে গিয়া পাহছিল। সহসা তথায় যাবতীদিগের হাস্যধৰনি থামিয়া গেল, বৌয়ে বাঁয়ে ঝিয়ে ঝিয়ে কাণাকাণি হইতে হইতে সেই খবর রান্নাঘরে গিয়া পাহছিল। তথায় যে উনানে কাটি দিতেছিল, সে স্তম্ভিত হইল, যে ঝিমাইতেছিল, সে সহসা জাগরিত হইল, ও শ্যামীর মা ও বামীর মা গিন্নীর সংখ্যাতি প্রকটিত করিতে করিতে সহসা হৃদ্কম্প বোধ করিল। তাহারা উদ্ধৱ"াসে রান্নাঘর হইতে উপরে আসিয়া সভযে গহিণীর ঘরে প্রবেশ করিল। বামীর মা। হ্যাঁ গা, আজ বকেটা কেমন আছে গা ? আমি এই রান্নাঘরে উননে কাট দিচ্ছিলেম, তাই আসতে পারিনি, তা একবার দি না বনকটা মালিস করে ? গহিণী। এই ষে এসেছ, তব ভাল। তোমাদের আর বার হয় না, লোকটা মরে গেল কি বেচে আছে একবার খোঁজখবরও নিতে নেই ? উঃ, যে ব্যথা, এ কি আর কমে, পোড়ারমাখো কবরেজ এই একমাস ধরে দেখছে, তা ও ত কিছু করতে পারলে না। তা কবরেজেরই বা দোষ কি, বাড়ীর লোক একটা সেবাটেবা করে, একটু দেখে শুনে, তবে ত ভাল হয় । তা কি কেউ করবে ? বলে কার দায়ে কে ঠেকে। বামীর মা ও শ্যামীর মা আর প্রত্যুত্তর না করিয়া দুই জনে দুই পাশে বসিয়া মালিস আরম্ভ করিল, গহিণী পা দটী ছড়াইয়া মুখে তেল মাখিতে মাখিতে আবার বিন্দর সহিত কথা আরম্ভ করিলেন। গহিণী। তোমার ছেলে দটী ভাল আছে, অমন কাহিল কেন গা ? বিন্দর। ওরা হয়ে অবধি কাহিল, মধ্যে মধ্যে জর হয়, আর ছোটটীর আবার একটা পেটের অসুখ করেছিল, এখন সেরেছে। গহিণী। তাই ত হাড়গুলো যেন জির জির করছে! তা বাছা, একট জেয়াদা করে দুধ খাওয়াতে পার না, তা হলে ছেলে দটী একটু মোটা হয় । এই আমার ছেলেদের দিন একসের করে দধে বরাদ, সকালে আধ সের, বিকালে আধ সের। তা না হলে কি ছেলে মানুষ হয় ? বিন্দ। দুধ খায়, গয়লানীর যে দুধ, অদ্ধেক জল, তাতে আর কি হবে বল ? গহিণী। ও মা ছি! তোমরা গয়লানীর দুধ খাওয়াও, আমাদের বাড়ীতে গয়লানীর পা দেবার যো নেই। আমাদের বাড়ীতে গরম আছে, ঐ সে দিন ৮০ টাকা দিয়ে বাব আপিসের কোন সাহেবের গর কিনে এনেছেন, ৫ সের করে দধে দেয়। তা ছাড়া দটো দিশি গরম আছে, তারও ৩। ৪ সের দধে হয়। বাড়ীর গরর দুধ না খেয়ে কি ছেলে মানুষ হয়, গয়লানীর আবার দধ, সে পচা পাকুরের জল বৈ ত নয়। বিন্দর একট ক্ষীণস্বরে ধীরে ধীরে বলিলেন,—তা সকলের ত সমান অবস্থা নয়, ভগবান আপনার মত ঐশ্বয কয় জনকে দিয়াছেন ? আমরা গরম কোথা পাব বলনে ? যা পাই তাইতে ছেলে মানুষ করতে হয়। একট হৃষ্ট হইয়া গহিণী বলিলেন-তা ত বটেই। তা কি করবে বাছা, যেমন করে পার ছেলে দটীকে মানুষ কর। তা যখন যা দরকার হবে, আমার কাছে এস, আমার বাড়ীতে দুধের অভাব নেই, যখন চাইবে, তখনই পাবে। లరి రి