পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৪১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সংসার .কু মোকে অকল করে আনাইল কি না আমি অব ল ना । শরৎ । কেন ? নবীন। তোমার সহিত আমার অনেক দিন হইতে বন্ধত্ব, তোমাদের গ্রামের লোকের নিকট সুম ল লি না। হেমবাবর অধিক টাকাকড়ি নাই, তাঁহার নিকট আমি অথ* ना । শরৎ। হেমবাব দরিদ্র বটে, কিন্তু আমি তাঁহাকে বিশেষ করিয়া জানি, বিনা বেতনে চিকিৎসা করা অপেক্ষা আপনি অর্থ গ্রহণ করিলে তিনি সত্য সত্যই তুষ্ট হইবেন। নবীন। না শরৎ, আমার কথাটী রাখ, আমি যাহা বলিলাম তাহা করিও। এ ব্যারাম সহসা ভাল হইবে আমি প্রত্যাশা করি না, আমাকে অনেক দিন আসিতে হইবে, সব্বদা আসিতে হইবে। আমি যদি বিনা অথে আসিতে পারি, তবে যখন আবশ্যক বোধ হইবে, তখনই নিঃসঙ্কোচে আসিতে পারিব । শরৎ। নবীন বাবা, আপনি যাহা বলিলেন তাহা করিব। কিন্তু আপনার সময়ের মল্য আছে, অথেরও আবশ্যক আছে, বিন্য পারিতোষিকে সকল রোগীকে দেখিলে আপনার ব্যবসা চলিবে কিরাপে ? নবীন। না শরৎ, আমার সময়ের বড় মল্যে নাই, তুমি জান, আমার এখনও অধিক পসার হয় নাই, আমি বাড়ীতে বসিয়া থাকি। আর আমার পসার সম্বন্ধে ভবিষ্যতে কি হয় তাহা আমি জানি না, এই একটী রোগের অর্থ গ্রহণ না করিলে তাহাতে কিছু ক্ষতিবৃদ্ধি হইবে না। বন্ধর জন্য একটী বন্ধর কাজ কর, আমার এই কথাটী রাখিও। শরৎ সম্মত হইলেন, নবীন চলিয়া গেলেন। শরৎ তখন ঔষধ, পথ্য, বরফ, আক প্রভৃতি সমস্ত আবশ্যকীয় দ্রব্য কিনিয়া আনিলেন। সে দিন রোগীর শয্যার নিকট থাকিবার জন্য অনেক জেদ করিলেন, কিন্তু হেম সে কথা শুনিলেন না, শরৎকে জোর করিয়া কলেজে পাঠাইলেন। অপরাহ্লে শরৎ নবীনবাবরে সহিত আবার আসিলেন। নবীনবাব রোগীকে দেখিয়াই বুঝিলেন, তিনি যাহা ভয় করিয়াছিলেন তাহাই হইয়াছে, এ সপস্ট রিমিটাণ্ট জর। রোগীর চক্ষ দটী আরও রক্তবর্ণ হইয়াছে, রোগীর মাথায় সমস্ত দিন বরফ দেওয়াতেও উত্তাপ কমে নাই, সন্ধার স্বাভাবিক গৌরবণ মুখখানি জবরের আভায় রঞ্জিত, এবং সন্ধা সমস্ত দিন ছট ফট করিয়াছে, এপাশ ওপাশ করিয়াছে, কখনও শুইয়াছে, কখনও বায়না করিয়া দিদির গলা ধরিয়া বসিয়াছে, কিন্তু মহেত্তোমধ্যে আবার শ্রান্ত হইয়া শ্যইয়া পড়িয়াছে। নবীনবাব সভয়ে দেখিলেন, নাড়ী প্রায় ১৫o. তাপযন্ত্র দেখিলেন, তাপ ১০৫ ডিগ্রি ! ঔষধ ঘন ঘন খাওয়াইতে বারণ করিলেন, আর একটী ঔষধ লিখিয়া দিয়া বলিলেন যে সেটী দিনের মধ্যে তিন বার এবং রাত্রিতে যখন আপনা-আপনি ঘুম ভাঙ্গিবে তখন একবার খাওয়াইলেই হইবে। খাদ্যের বিশেষ ব্যবস্থা করিয়া গেলেন, শরৎকে ডাকিয়া বলিয়া গেলেন, “এ রোগে খাদ্যই ঔষধ, সব্বদা খাদ্য দিবে, যথেস্ট খাওয়াইতে ত্ৰটেী হইলে রোগী বাঁচিবে না।” কয়েক দিন পর্যন্ত সন্ধা সেই ভয়ঙ্কর জনরে যাতনা পাইতে লাগিল। শরৎ তখন হেমের কথা আর মানিলেন না, পড়াশনা বন্ধ করিয়া দিবারাত্রি হেমের বাড়ীতে আসিয়া থাকিতেন, ঔষধ আনিয়া দিতেন, নিজ হন্তে সাব বা দন্ধ প্রস্তুত করিয়া দিতেন। বিন্দ সংসারের কাযর্ণবশতঃ কখন কখন রোগীর শয্যা পরিত্যাগ করিলে শরৎ তথায় নিঃশব্দে বসিয়া থাকিতেন, হেমচন্দ্র শ্রান্তি ও চিস্তাবশতঃ নিদ্রিত হইলে শরৎ অনিদ্র হইয়া সেই রোগীর সেবা করিতেন। জবরের প্রচন্ড উত্তাপে বালিকা ছট ফটা করিলে শরৎ আপনার শ্রান্তি, নিদ্রা ও আহার ভুলিয়া গিয়া নানারপে কথা কহিয়া, নানারপে গল্প করিয়া, নানা প্রবোধবাক্য ও আশ্বাস দিয়া সন্ধাকে শান্ত করিতেন, জনরের অসহ্য যাতনাযুক্ত সন্ধা সেই কথা শুনিয়া একটা শান্তি লাভ করিত। কখনও বালিকার ললাটে হাত বলাইয়া তাহাকে ধীরে ধীরে নিদ্রিত করতেন, কখন তাহার অতি ক্ষীণ দাবলি রক্তশন্য গৌরবণ বাহুলতা বস্তু অঙ্গলীগুলি হস্তে ধারণ করিয়া রোগীকে তুষ্ট করিতেন; মাথা উষ্ণ হইলে শরৎ সমস্ত দিন বরফ ধরিয়া থাকিতেন। রাত্রি দ্বিপ্রহরের সময় রোগীর অদ্ধাসফটিত শব্দগলি শরতের কণে অগ্রে প্রবেশ করিত, বালিকা শাক ওঠদ্বয়ে সেই শরতের হস্ত হইতে C) 이