পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৪৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब्रटप्रश्न ब्रध्ननाबञी শরৎও ছেলেমানষে, ওরা সব সে দিনকার ছেলে, সে দিন ওদের হাতে করে মানুষ করেছি, ওদের কি এখনও তেমন বৃদ্ধিসদ্ধি হয়েছে ? তা নয়। বৃদ্ধি থাকলে কি আর এমন কাজ করে ? তা যা হয়েছে হয়েছে, বিন্দর আর সে কথাটী মুখে আনে না; তা তাতে তোমার ছেলের বিয়ে আটকাবে না, নিন্দে মেয়েদেরই। ভুগতে হবে, নিন্দে সইতে হবে, বিন্দকে আর বাছা সন্ধাকে। আহা সে কাঁচ মেয়ে, কিছ জানে না, সে দিন অবধি বেড়াল নিয়ে খেলা করত, আর অাঁকুসি দিয়ে পেয়ারা পেড়ে খেত, তাকেও এমন কলণ্ডেক ডোবায়। আহা, বাছার শরীরখানি যেন খেংরা কাঠি হয়ে গিয়েছে, মুখখানি সাদা হয়ে গিয়েছে, চোক দটী বসে গিয়েছে। দুধের ছেলে,— এমন কলঙ্ক কি সে সইতে পারে ? তা কপালে নিন্দে আছে, কে খন্ডাবে বল ? শরতের মা । আহা, বাছা সন্ধার কথা মনে হলে আমার বকে ফেটে যায়। কাঁচ মেয়ে, ছেলেবেলায় বিধবা হয়েচে, আহা বাছার কপালে যে কি কস্ট তা আমরাই বুঝি, সে দুধের ছেলে, সে কি বুঝবে ? তার উপর আবার এই নিন্দে ? যারা নিন্দে করে, তাদের কি একটা মায়াদয়া নেই গা, একটা বিচার নেই ? সন্ধা কি করেছিল ? তার এতে কি দোষ বল ? অার কাকেই বা দোষ দি ঃ বাছা বিন্দও ত মন্দ ভেবে এ কাজ করেনি; শরৎ সন্ধাকে বিয়ে করতে চেয়েছিল, কলিকাতায় নাকি এমন বিয়ে কটা হয়ে গিয়েছে; বিন্দর ছেলেমানষে, সে মনে ভাবলে, এ বিয়ে হলেই বা, না হয় লোকে দুটা মন্দ বলবে, শরৎ আর সন্ধা ত সুখে থাকবে। এই ভেবেই বিন্দ কাজটা করতে চেয়েছিল, সেও মন্দ ভেবে করেনি। আহা, বিন্দকে আমি ছেলেবেলা থেকে জানি; তার মত মেয়ে আমাদের গ্রামে নেই। তা বিন্দ আমাদের বাড়ী আসে না কেন ? তাকে আসতে বলো, তাকে দেখলেও প্রাণটা জড়ায়। উমার মা। আমি বলি গো বলি : তা সে সমস্ত দিনই কাজ করছে, তাই আসতে পারে না। বাছা সন্ধা ত আর এখন কিছ কাজ করতে পারে না, তার যে শরীর হয়েছে, তাকে বড় কাজ করতে দি না। আমিও এই শোকে আর পেরে উঠিনি, কুটনো কুটতে উমাকে মনে পড়ে, ভাত বাড়তে উমাকে মনে পড়ে, উঠতে দাঁড়াতে উমাকে মনে পড়ে। আহা বাছারে, এই বয়সে মাকে ফেলে কেমন করে গেলি ?—উভয়ে অনেকক্ষণ রোদন করিতে লাগিলেন। কালীতারা সেই সময়ে ঘরে আসিলেন। উমার মা তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন-হ্যাঁ কালী, তোর ভাই অমন হয়ে যাচ্ছে কেন ? তুই একটা দেখিস বাছা, একটা খাবারদাবার যত্ন করিস, পড়ে পড়ে কি ব্যারাম করবে ? কালী। আমি যত্ন করি গো, কিন্তু সদাই পড়াশনা করে : খাওয়াদাওয়ায় তেমন মন নেই, তাই কাহিল হয়ে যাচ্ছে । উমার মা। বিয়ের কথা বলেছিলি ? কালী। একবার কেন, অনেকবার বলেছিলেম। উমার মা ! কি বলে ? কালী। সে কথায় কাণ দেয় না. বলে বিবাহে তার রচি নেই। অনেক জেদ করে, মার নাম করে বললে বলে, মাকে বলো, মা যদি নিতান্ত ইচ্ছা করে থাকেন, তবে আমি বিবাহ করব, কিন্তু আমি সখী হব না ! উমার মা। ও সব ছেলে আমনই করে বলে গো, তার পর বোঁকে পছন্দ হলেই মন ফিরে যায় । আমার বোধ হয় বিবাহ দেওয়াই কত্তব্য। শরতের মা। না দিদি, বাছা শরৎ আমার কাছে কখনও মনের কথা ঢেকে রাখে না। আমায় ভয় করে, আমি জোর করে বিয়ে দিলে পাছে শরৎ অসুখী হয়! আমার কপাল ত অনেক দিনই ভেঙ্গেছে, বাছা কালীর উপরও ভগবান নিদায় হলেন (রোদন), কেবল শরৎই আমার ভরসা, শরৎ যদি অসুখী হয়, এ চক্ষে দেখতে পারব না। উমার মা। বালাই, কেন গা বাছা শরৎ অসুখী হবে ? তা এখন বিয়ে না করে নেই, পরে করবে। এখন পড়াশনায় মন দিয়েছে, না হয় পড়কে না, সে ভালই ত। শরতের মা । দিদি, পড়াশনাও যে তেমন হচ্ছে, আমার বোধ হয় না। শরতের চিরকাল নোয় মন আছে, সে জন্য সে এমন কাহিল হয়ে যায় না। উমার মা সে দিন বিদায় হইলেন। কালীতারা বলিলেন,—মা, তবে শরতের জন্য কি করব ? ডাক্তার দেখাব ? 8ՀC)