পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৪৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রমেশ রচনাবলী ফটফটে পরীর ন্যায় শরীর! একটী দীঘনিশ্বাস ত্যাগ করিয়া সন্ধ্যার অন্ধকারে বদ্ধ গহে ফিরিয়া আসিলেন, মনে মনে স্থির করিলেন,–টাকা অামার শরীরের রক্ত, কিন্তু শরীরের রক্তপাত করিয়াও এ রত্নটী লাভ করিব। বংশটা বড় হারামজাদা, কিন্তু মেয়েটাকে একবার ঘরে আনতে পারিলে হয়, টাকা সদসদ্ধ আদায় করব, মিত্রদের ঘর ভিটে যদি বিক্রয় করিয়া না লই, তবে - আমার নাম তারিণী মল্লিক নয় ! আবার কয়েকদিন ঘটকী হাঁটাহাটি করিল, দুই হাজার টাকা,-আড়াই হাজার টাকা—তিন হাজার টাকা,—উহ! গোকুল প্রকাশ্যে বলিল,—আমরা নিতান্ত গরিব, তারিণীবাব অনুগ্রহ না করিলে কে করিবে ? মনে মনে বলিল,—বড়ো বয়সে ধেড়ে রোগ ধরিয়াছে, টাকা দেবে না ? नाटक मज्जौ मिझा प्लेाका ठामाझ कर्गद्भव। যদি না হয়, তবে ঐ সনাতনবাটী গ্রামে বসদের বাড়ীতে যে মেয়েটী আছে, দেখতে শুনতে ভাল, বয়সও শুনেছি দশ বার বৎসর হইয়াছে, তাহাদের বাড়ী যাইও । এই মাসেই ক্রিয়া সমাপন হইবে, ঠিক করিয়া আসিও । গোকুল দেখিল, নাজির মশাইয়ের নিদেন মানরক্ষার জন্যও তাঁহার কথাটা কতক রাখা চাই। অতএব সেই চারি হাজার টাকাতেই সম্মত হইল, আর ভিক্ষা বলিয়া দেড় শত টাকা, আর চেলির কাপড় বলিয়া পঞ্চাশ টাকা, আর খাওয়ানদাওয়ান বলিয়া একশত টাকা, আর তত্ত্ব বলিয়া । পঞ্চাশ টাকা, আর সভাখরচ পঞ্চাশ টাকা, আর বিবাহের অন্য খরচ বলিয়া একশত টাকা আদায় করিয়া লইল। বলা বাহুল্য যে এই ভিক্ষা ইত্যাদি খরচেই গহে চুনকাম করা, পুকুর সংস্কার করা ও বিবাহের সমস্ত ব্যয়ের আয়োজন হইল, চারি হাজার টাকার গোকুলবাবর কোম্পানির কাগজ হইল। পঞ্চম পরিচ্ছেদ ঃ বিবাহের আয়োজন তালপুকুরে হলেস্থলে পড়িয়া গেল। ধনশালী বিষয়ী বিজ্ঞ মহামান্য নাজির মহাশয় আবার দারপরিগ্রহ করিবেন, গ্রামের মধ্যে সন্দেরী মেয়ে বাছিয়া তাহাকে হৃদয়েশ্বরী করবেন, মিত্রবংশ সন্মানিত করিবেন, মল্লিকবংশ উজলল করিবেন, বিবাহে বড় ঘটা হইবে, দেশের সমস্ত ভদ্রলোক সমবেত হইবে, মলেমকের কাঙ্গালী ভিখারী বিদায় পাইবে,—এইরুপ কথা ঘরে, দ্বারে, পথে, ঘাটে প্রতিধর্মনিত হইতে লাগিল। কৃষকেরা মল্লিকবাড়ীর নিকট দিয়া যাইবার সময় একবার দাঁড়াইয়া দুটা খোসগল্প শনিয়া যাইত, রমণীগণ মিত্রবাড়ীর নিকট কলসী নামাইয়া একবার , মেয়েকে দেখিয়া যাইত । তারিণীবাবর বৈঠকখানা প্রাতঃকাল হইতে মধ্যাহ্ন পৰ্য্যন্ত, মধ্যাহ্ন হইতে রাত্রি পর্যন্ত লোকারণ্য; কত বন্ধ, কত পরামর্শদাতা, কত সমাজপতি ও দলপতি, কত ব্রাহ্মণ পণ্ডিত আসিত, তাহার ঠিক নাই। দিবারাত্রি সাধুবাদ ও স্তুতিবাদ ও নাজির মহাশয়ের বিজ্ঞতার প্রশংসা চলিত। দলপতি ও সমাজপতি বলিতেন,–এ ত তারিণীবাবরেই উপযুক্ত কাজ। এরপে যোগ্য লোক কি আজকাল দেখিতে পাওয়া যায় ? লক্ষয়ী সরস্বতী দ্বারে বাঁধা। বিদ্যা-বুদ্ধি বলে সাহেব মহলে তারিণীবাবর কত মান, কত রাজা রায়বাহাদর হার মানিয়া যায়। আর বিষয়ের ত কথাই নাই, তালপুকুরের মধ্যে দীনদরিদ্র ইতরভদ্র, যে যখন বিপদে আপদে পড়ে, তারিণীবাব ভিন্ন আর সহায় কে ? তারিণীবাব দীর্ঘজীবী হউন, আমাদের সমাজ বজায় রাখনে, আশা পত্রমখে দেখিয়া পরম সুখ ভোগ করন, ইত্যাদি। ব্রাহ্মণ পণ্ডিতগণ তারস্বরে কহিলেন-তারিণীবাবরে সদাই ধমে মতি, তিনি ধৰ্ম্মমনিষ্ঠ লোক, তাঁহার ত এ যোগ্য কাজই বটে। সংকুল দেখিয়া, ভদ্রবংশ দেখিয়া সলেক্ষণা কন্যা স্থির করিয়াছেন, শাস্ত্রসঙ্গত কাজ করিয়া হিন্দ আচার বজায় রাখিয়াছেন। আজকাল যেরপে সময়, নাস্তিকগুলো কি করে, তাহার কি ঠিক আছে ? কেহ বয়স্কা কন্যা খোঁজে, কেহ বিধবা বিয়ে করিতে চায়, কেহ বা আবার জাতি ছেড়ে অন্য জাতিতে বিয়ে করে। ছিঃ! ছি:! সমাজ, তারিণীবাবকে দেখিয়া শিক্ষা লাভ কর! পত্রসস্তান কামনায় সদ্বংশজা, সলেক্ষণা, নবমবষীরা বালিকা اے اے نا ہگ 8