পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৪৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

, সমাজ শরচ্চন্দ্র অনেকক্ষণ পৰ্য্যন্ত বাক্যশান্য হইয়া রসিয়া রহিলেন, শেষে উঠিয়া রমাপ্রসাদের পদধলি গ্রহণ করিয়া বলিলেন,—গরদেব ! আপনি আজ আমাকে যে শিক্ষা দিলেন, তাহা পিতৃগৃহে শিখি নাই, বিদ্যালয়ে শিখি নাই, কাৰ্য্য-ক্ষেত্রে শিখি নাই! আমাদের এরপে শাস্ত্ৰ-কথা, নীতি-কথা থাকিতে আমরা বিদেশীয়দিগের নিকট শাসের কাঙ্গালী হই! গরদেব ! সাহসে দণ্ডায়মান হউন, উৎসাহে অগ্রসর হউন, কুরীতি ও অজ্ঞান-তিমির তিরোহিত করিয়া আমাদের সনাতন ধৰ্ম্মম প্রকাশ করন, সনাতন শাস্ত্র প্রকাশ করন, সনাতন নীতি শিক্ষাদান করন! পর্যসিংহ! আপনার এ উদ্যম সাথক হইবে, মন্মষে কুপ্ৰথা-পীড়িত জাতি আপনার সঞ্জীবনী কথায় জীবন পাইয়া পনরন্থান করিবে। যুবকের উৎসাহ দেখিয়া সরস্বতী ঠাকুরের চক্ষতে জল আসিল। তিনি শরৎকে আলিঙ্গন করিয়া বলিলেন,—শরৎ ! তুমি আমাকে চেন না,—আমি তোমাকে চিনি। তোমার কাষ্যকলাপ আমি জানি, তোমার উৎসাহ ও উদ্যম আমি জানি ! তোমাদের ন্যায় লোক থাকিলে আমাদের “ཡཱ་ཡཱ་ཀཱ་༡ ཟླ་༢ །། তৎপর সরস্বতী ঠাকুর হেম ও শরৎকে সঙ্গে করিয়া তাঁহার ঘরের ভিতর গেলেন । ঠাকুরের ভগ্ন ঘরটী যোগমায়া পরিকার করিতেছিলেন,—বাহিরের দুইজন লোক দেখিয়া যোগমায়া সরিয়া গেলেন। সরস্বতী ঠাকুর বলিলেন;–ভদ্রে যোগমায়া, সরিয়া যাইবার আবশ্যক নাই। হেমবাব ও শরৎবাব আমার কনিষ্ঠ ভ্রাতাবরপে,—অলপদিন মধ্যে তুমিও ই-হাদিগকে চিনিবে। আজ উ'হারা আমার এইখানেই কিঞ্চিৎ আহার কারবেন, তিনটী পাত পাড়। যোগমায়া সেইরাপই করিলেন। পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ ঃ শাপত্রশিক্ষা শরৎ। আজ আপনার শাস্ত্রব্যাখ্যা শনিয়া আমার হৃদয়ে নতন আশার সঞ্চার হইল। এই নতন শিক্ষা কবে এদেশে প্রচলিত হইবে ? সরস্বতী। শরচ্চন্দ্র! এ শিক্ষা নতেন নহে, আমাদের শাস্ত্র যত দিনকার, বেদ যত দিনকার, এ শিক্ষা তত দিনের। তবে আধুনিক কালে জনসাধারণের অজ্ঞানতাবশতঃ তাহারা এ পবিত্র প্রথা হারাইয়াছে, ভ্রান্ত হইয়া কুপথ অবলম্বন করিয়াছে। তুমি যদি বারাণসী নগরে কখনও যাও, বিশ্বেশ্বর মন্দিরে যাইও, দেখিবে তথায় শাস্ত্রজ্ঞ পণ্ডিতগণ এখনও বেদপাঠ করেন, সে পবিত্র গীত শুনিলে পাপমোচন হয়, সক্িেত লাভ হয়। শরৎ । আমি কাশীতে কখনও যাই নাই, কিন্তু শুনিয়াছি তথায় এখনও বেদ-বেদাঙ্গের চচ্চা আছে। কিন্তু সে কয়জনের মধ্যে? প্রকৃত শাস্ত্রকথা আমাদের দেশে কয়জন জানে ? সরস্বতী। অতি অল্পই বটে। এবং সেই জন্যই আমাদের প্রাচীন আচার, ব্যবহার, ধম’ ও নীতি, সকলই বিকৃত রপে ধারণ করিয়াছে! শরৎ, তুমি ত ভিন্ন ভিন্ন দেশের ইতিহাস অবগত আছ, তুমি কি জান না যে জনসাধারণ অজ্ঞান ও মুখ হইয়া থাকিলে, দেশাচার বিকৃত হইয়া যায় ? তুমি কি জান না যে জ্ঞানের আলোক বিকাশ পাইলে তাহার সঙ্গে সঙ্গে রীতি ও দেশাচারের পুনঃসংস্কার হয় ? শরৎ। সরস্বতী ঠাকুর! তাহা আমি জানি, জগতে এরপে অনেকবার ঘটয়াছে। কিন্তু আমাদের দেশে কি সেটি ঘটিবে? আমাদের দেশে কে প্রকৃত শাসপ্রচার করিবে ? যাঁহারা শাস্ত্রজ্ঞ, যাঁহারা শিখাইলে শিখাইতে পারেন, তাঁহারাই বাথের জন্য সেগুলি সঙ্গোপন করেন। হতভাগ্য দেশে কি পনরায় শাস্ত্রজ্ঞান প্রকাশের উপায় আছে ? সরস্বতী। শরৎ যাঁহারা শাস্ত্ৰজ্ঞ, তাঁহারা বাথপর নহেন, তাঁহারা শাস্ত্রজ্ঞান গোপন করেন না! শাস্ত্ৰজ্ঞ রাজা রামমোহন রায় প্রথমে উপনিষদগুলি অনুবাদ করিয়া বঙ্গবাসীদিগের হস্তে অপণ করেন। শাস্ত্রজ্ঞ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সমুদ্রতুল্য শাস্যমন্থন করিয়া সমাজ-সংস্কারে পবিত্র জীবন অতিবাহিত করেন। শনিয়াছি এখনওঁ কলিকাতায় শাস্ত্ৰজ্ঞ বঙ্কিমচন্দ্র মহাভারতের পণ্যকথায় স্বদেশীয়ুদিগকে উদার শিক্ষা দিতেছেন। শরচ্চন্দ্র। ইহাদের উপদেশ, ইহাদের কার্য্য, ইহাদের চেষ্টা ফলপ্ৰসবিনী হইবে, বঙ্গসমাজ ইহাদের আহত রত্বের উত্তরাধিকারী! কিন্তু এরপ অসাধারণ পণ্ডিতদের কথা ছাড়িয়া দাও, শাম্ম প্রকাশ করা , 8હવ’