পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৪৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রমাপ্রসাদ। তবে এ উপদ্রব কেন ? . গহিণী। বাবর আদেশ। রমাপ্রসাদ। দরিদ্রের উপর উপদ্রব করিলে কি বাবর মঙ্গল হইবে ? গহিণী সঙ্কুচিত হইয়া বলিলেন,—আমিও বাবকে তাই বলিয়াছিলাম, বাব শুনিলেন না। রমাপ্রসাদ। বাবকে আর একটা বঝোইয়া বলিবেন যে দরিদ্রের উপর অত্যাচারে বড়লোকের অমঙ্গল হয়। গহিণী। বলিয়াছিলাম। বাব শুনিলেন না। রমাপ্রসাদ। তবে বাবকে জিজ্ঞাসা করিবেন, রমণীকান্ত নামে এক জমিদার-পত্র এই জমিদার গহে বাস করিতেন, বাব তাঁহাকে জানিতেন কি ? গহিণী শিহরিয়া উঠিলেন। কোন উত্তর করিলেন না। রমাপ্রসাদ। তাঁহাকে আপনি দেখিয়াছিলেন কি ? গৃহিণী। দেখিয়াছিলাম। তখন আমার নাতন বিবাহ হইয়াছে। রমাপ্রসাদ। তিনি কোথায় গেলেন জানেন কি? গৃহিণী। তাঁহার অনেক দিন হইল কাল হইয়াছে। রমাপ্রসাদ। কিরাপে তাঁহার মৃত্যু হয় ? গহিণী আবার শিহরিয়া উঠিলেন। রমাপ্রসাদ। তাঁহার কিসে মৃত্যু হয় শুনিয়াছেন কি ? গহিণী। মরা মানুষের কথায় প্রয়োজন কি ? রমাপ্রসাদ। তবে বাবকে বলিবেন, দরিদ্রের উপর উৎপীড়নে প্রয়োজন কি ? পাপের পরিমাণ অধিক হইলেই প্রায়শিচত্ত আরম্ভ হয়। গহিণীর সহিত রমাপ্রসাদের যাহা যাহা কথা হইয়াছিল, যোগমায়া একপাশ্বে দাঁড়াইয়া সমস্ত শুনিয়াছিলেন। সেদিন সন্ধ্যার সময় যোগমায়া রমাপ্রসাদের আহারের সময় আসিলেন না। নিশীথে রমাপ্রসাদ যদি উঠিয়া দেখিতেন, তাহা হইলে দেখিতে পাইতেন যে সেই শীণকায়া হতভাগিনী তাঁহার মাথার নিকট বসিয়া অশ্রদ্বষণ করিতেছেন। প্রাতঃকালে যোগমায়া যখন জলটল লইয়া আসিলেন, সন্ন্যাসী ঠাকুর একট হাসিয়া বলিলেন,—এ জমিদার-গহের লোকজন সব ভাল লোক ত? রাত্রিতে আসিয়া সন্ন্যাসীর বুলিটী, গরিবের বাক্সটী, নাড়াচাড়া করে কে ? যোগমায়া হে’টমখেী হইয়া রহিলেন, ক্ষণেক পর বলিলেন,—কৈ, এ বাড়ীর লোকজনের কোনও বদনাম শুনি নাই: আপনার কোন দাসী আপনার দ্রব্য নাড়িয়াচাড়িয়া থাকিবে। অন্টাদশ পরিচ্ছেদ ৪ খিড়কীর পকূেরের খোসগল্প পরদিন প্রাতে সন্ন্যাসী ঠাকুর চলিয়া যাইবেন সকলে প্রত্যাশা করিয়াছিল, দেখিল তাহার বিপরীত। সন্ন্যাসী ঠাকুরের সেবার জন্য বড়কত্তার খাস ভূত্য প্রাতঃকাল হইতে ছাটাছটি করিতেছে! সন্ন্যাসী ঠাকুরের খাইবার জন্য গয়লা দধে মাখন আনিয়া দিল, ময়রা মিস্টান্ন আনিয়া দিল ! সন্ন্যাসী ঠাকুরের হুকুম পালনজন্য একজন দ্বারবান সব্বদা দ্বারে দণ্ডায়মান । বড় গহিণীর খাস দাসী সন্ন্যাসী ঠাকুরের ঘর ঝাঁট দিতেছে, বড় গহিণীর খাস রাঁধনী রন্ধনের আয়োজন করিতেছে! জমিদার-বাটীর খিড়কী পলকুরের ঘাটে আজ বড় হলেস্থলে। মেয়েমহলে খোসগল্পের শেষ নাই! দুঃখের বিষয় কোন সংবাদপত্রের সংবাদদাতা খিড়কী পর্কুেরঘাটে দণ্ডায়মান ছিলেন না, এবং কোন নব্য লেখকও সেই ঘাটের কথাবাত্তার “শট হেণ্ড রিপোর্ট” লয়েন নাই। যদি লইতেন, তাহা হইলে “মেয়েমহলে চরিত্র সমালোচনা” নামক অপবে উপন্যাস লিখিয়া বঙ্গীয় পাঠকবৃন্দকে তৃপ্ত করিতে পারিতেন। প্রথমে, মল পায়ে, গহনা গায়ে, হাসি মুখে, নবীনাদিগের দল সেই ঘাটে কম ঝম করিয়া டி ৪৬৩’