পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बछर्गब८छङा -or অমলা। আমাদের জমীদার নাকি এক বড় ঘরের মেয়ের সঙ্গে তাঁর ছেলের সম্প্ৰবন্ধ স্থির করিয়াছিলেন; মেয়ে নাকি বড় রপেসী, রপে যেন বিদ্যুতের মত, আর চক্ষ দটী যেন,–যেন, দটী কাল কাল ভোমরার মত। সরলা । তার পর ? অমলা। তার পর সম্প্রবন্ধ স্থির হইলে আমাদের জমীদারের ছেলে নাকি বলিলেন, আমি ও মেয়েকে বিবাহ করিব না। সরলা । কেন ? অমলা। কেন, তা জানি না, শনিয়াছি, কোন পল্লীগ্রামে কোন এক গরীব মেয়েকে দেখিয়া মন হারাইয়াছেন। তা সেই মেয়েকে বিবাহ করিবার জন্য নাকি গহত্যাগী হইয়াছেন ! আমার সইকেই বা দেখিয়া থাকিবেন! সরলা । তামাসা কর কেন সই ? আচ্ছা, বাপ বলছেন একজনকে বিবাহ করতে, ছেলে আর একজনকে বিবাহ করবেন ? অমলা। তা যার যাকে মনে ধরে ; বাপ যাহাকে বিবাহ করতে বলেন, তাহাকে যদি মনে না ধরে ? - সরলা। কেন ধরবে না ? অমলা। তুই যেমন হাবা, তোকে আর কত শিখাব। বলি, মাকে বল বিবাহ দিতে, তাহা হইলে সব শিখবি। এই বলিয়া আবার সরলার গাল টিপিয়া দিল। এই প্রকার কথোপকথন করিতে, করিতে উভয়ে নদীর ঘাটে উপস্থিত হইল। নদীর তীরে যাইয়া এক অপরাপ দশন দটি হইল। তথায় নিবিড় কৃষ্ণবর্ণা, দীঘ"ায়তা, ছিন্নবসনা এক সন্ত্রীলোক দণ্ডায়মান আছে। তাহার গলদেশে অক্ষমালা, হস্তে দণ্ড, শরীরে ভস্ম, F দেখিয়া দুই জনই বিস্মিত হইল। অমলা জিজ্ঞাসা করিল,— কে গা ? সে উত্তর করিল,—আমার নাম বিশ্বেশ্বরী পাগলিনী। অমলা বলিল,—হাঁ হাঁ, আমি বিশ পাগলীর নাম শুনিয়াছি। তুমি আগে এ গ্রামে একবার আসিয়াছিলে না ? বিশ্বেশ্বরী। আসিয়াছিলাম। অমলা। তুমি না হাত দেখিতে জান ? বিশ্বেশ্বরী। জানি । অমলা। আচ্ছা, আমার হাত দেখ দেখি । পাগলিনী হাত দেখিয়া ক্ষণেক পর বলিল,—তুমি দেওয়ানের গহিণী হইবে। অমলা। দরে পাগলী, আমার স্বামী বৰ্ত্তমান : বলে কি না দেওয়ানের পত্রী হবে। আমার দেওয়ান উজিরে কাজ নাই, আমার বদ্ধ স্বামী বাঁচিয়া থাকুক। এখন বল দেখি, আমার সইয়ের কবে বিবাহ হবে ? বিবাহের ভাবনায় সইয়ের রাত্রিতে ঘুম হয় না। পাগলিনী অনেকক্ষণ সরলার হস্তধারণপবেক নিরীক্ষণ করিতে লাগিল, মধ্যে মধ্যে তাহার মুখের দিকে চাহিতে লাগিল, আবার হস্ত দেখিতে লাগিল। অনেক ক্ষণের পর বলিল,—তোমার ভবিষ্যৎ আকাশ নিবিড় মেঘাচ্ছন্ন ; কৃষ্ণবণ মেঘরাশি ও ঘোর অন্ধকার ভিন্ন আর কিছুই দেখিতে পাই না। সম্প্রতি তুমুল প্রলয় উপস্থিত, তাহার পর কি আছে বলিতে পারি না। তিন দিন মধ্যে ঝড় আসিবে, আদ্যই এ গ্রাম হইতে পলায়ন কর, পলায়ন কর, পলায়ন কর! সরলা ভীত হইল। অমলা প্রিয়সখীর এইরুপ অবস্থা দেখিয়া পাগলিনীকে উপলক্ষ করিয়া বলিল,—ধান ভানিতে শিবের গীত ! আমি কি না জিজ্ঞাসা করিলাম, সইয়ের বিবাহ হইবে কবে, উনি আকাশ, মেঘ, প্রলয়ের কথা আনিলেন। দাঁড়া তো, আমি পাগলীকে জব্দ করি। এই বলিয়া অমলা পাগলিনীর গায়ে জল দিতে লাগিল, পাগলিনী ধীরে ধীরে দরে চলিয়া গেল। দরে যাইয়া পনরায় সরলার প্রতি দটি করিয়া বলিল,—পলায়ন কর, পলায়ন কর, পলায়ন কর! এদিকে অন্যান্য কৃষকপত্নীগণ আসিয়া ঘাটে উপস্থিত হইল। রামণী, বামণী, শ্যামী, নত্যের বোঁ, হরির মা ইত্যাদি, অনেক গ্রাম্য সন্দেরী আসিয়া ঘাট আলো করিয়া বসিল। নানাপ্রকার কথাবাত্তা ও রঙ্গরসে ঘাট জমকাইয়া তুলিল। ইচ্ছামতী নদী এত সৌন্দয্যের ছটা দেখিয়া আনন্দে సి