পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बक्रर्गबटछाप्छा বঙ্গদেশের শাসনকত্তা ও দেওয়ান মহাশয়ের প্রণয়ভাজন হইতে পারেন, তাহারই চেষ্টা করিতে লাগিলেন। দিনে দিনে, সপ্তাহে সপ্তাহে, মাসে মাসে অভাগা বিধবা ও অন্যথা কন্যার কথা বিস্মত হইতে লাগিলেন। বৎসর মধ্যেই সে দুঃখের কথা তিনি সম্পর্ণেরুপে ভুলিয়া গেলেন। রাজা সমরসিংহের যে বিধবা শত্রী ও অনাথা কন্যা আছে, তাহা নগেন্দ্রনাথের স্মরণপথ হইতে এককালে দরেীভূত হইল। 谬 পাঠক মহাশয়, নগেন্দ্রনাথকে কৃতঘ্য বলিয়া মনে করবেন না। এই অখিল ভূমণ্ডলের প্রতি দটি করন। ইহার মধ্যে কয় জন উপকারের প্রত্যুপকার করিবার জন্য আপন পথে কাঁটা দেন, কয় জন পবেকৃত উপকার স্মরণে আপন বাথ সাধনে বিরত হন ? স্নেহ, দয়া, মায়া, এ সকল স্বগীয় পদাৰ্থ । কিন্তু সবাথপরতা প্রতিদ্বন্দ্বী হইলে স্নেহ কত দিন থাকে, মায়ার পাত্র নয়নের বহিগতি হইলে মারা কত দিন থাকিতে পারে? আমরা যদি নগেন্দ্রনাথের প্রতি রাগ করিয়া থাকি, তবে নগেন্দ্রনাথকৃত অপরাধ হইতে আপনারা নিরস্ত থাকিতে যেন চেস্টা করি। বোধ করি, অনেক দরিদ্র আত্মীয় কুটবে আমাদিগের মুখ চাহিয়া আছে, তাহাদিগকে যেন আশ্রয় দান করি; বোধ করি, অনেক অনাথা বিধবা যাতনায় ও কচেট কথঞ্চিৎ জীবন ধারণ করিতেছে, সবাথপরতা ত্যাগ করিয়া তাহাদের সহায়তা দানে যেন ধাবমান হই। এ দুঃখপণ সংসারে চারিদিকে যে দুঃখরাশি দেখিতে পাই, তাহা সমস্ত নিবারণ করা মনয্যের অসাধ্য; কিন্তু যদি একজন ক্ষুধাত্তকে অন্ন দান করিতে পারি, একজন তৃষ্ণাত্তকে স্নেহবারি দিয়া তুস্ট করিতে পারি, একজন অনাথিনীর নয়নজল মোচন করিতে পারি, তবে এ কায"ক্ষেত্রে আমরা ব্যথা জন্ম ধারণ করি নাই । নগেন্দ্রনাথের পত্র সুরেন্দ্রনাথ এ জগতে ব্যথা জন্ম ধারণ করেন নাই। ধনবান জমীদারের পত্র হইয়াও ধনে তাঁহার অাদর ছিল না ; উচ্চ বংশে জন্মগ্রহণ করিয়াও তিনি কৃষকদিগের সহিত বাক্যালাপ করিতে ভালবাসিতেন ; কখন কখন কৃষকদিগের সহিত বাস করিতেন; সদাই কৃষকদিগের পরম বন্ধ ছিলেন। কতবার তিনি ছদ্মবেশে কৃষকদিগের গ্রামে ভ্রমণ করিতেন, তাহা বলিয়া শেষ করা যায় না। যখন সায়ংকালে কৃষকদিগের কুটীরে প্রদীপ জবলিত, যে সময়ে গো-শালায় গাভী সকল আসিয়া প্রবেশ করিত, কতবার তিনি কুটীরাবলীর পাশ্বে ইতস্ততঃ বিচরণ করিতেন, প্রজাদিগের দারিদ্র্যে সন্তোষ, জ্ঞানশন্যতায় দোষশন্যতা, দুঃখ ও ক্লেশে তপস্বীর ধৈয্য ও সহিকতা আলোচনা করিতেন, দিনে দিনে বৎসরে বৎসরে যুগ যগোস্তরেও প্রজাদিগের অপরিবত্তিত অবস্থা আলোচনা করিতেন। কতবার প্রজাদিগের সামান্য বিষয়ের কথাবাত্তা শুনিতেন,—অমক গ্রামে একটী পাকরিণী খনন হইতেছে; অমকে গ্রামে ধান্য দুমাল্য হইতেছে ; এ স্থানের মহাজন বড় শিষ্ট লোক; ও স্থানের গোমস্তা বড় অত্যাচারী;— সুরেন্দ্রনাথ এই সকল কথাই আগ্রহপবেক শ্রবণ করিতেন। এরপে সময়ে তিনি আপন ধনময্যাদা বিস্মত হইতেন ; আপন কুলগৌরব বিস্মত হইতেন; সেই ধান্যক্ষেত্ৰবেষ্টিত, আমুকাননশোভিত কুটীরবাসীদিগকে আপন ভ্রাতা জ্ঞান করিয়া ভ্রাতার মত তাহাদিগের সাহায্যে তৎপর হইতেন । যখন মহাশ্বেতা বালিকা কন্যা লইয়া চতুবোটিত দলগ হইতে পলায়ন করেন, সুরেন্দ্রনাথ আপন পিরালয় ত্যাগ করিয়া অনেক দিন অন্বেষণের পর তাঁহার সন্ধান পাইলেন। তৎকালে মহাশ্বেতা ইচ্ছামতী-তীরে মোহান্ত চন্দ্রশেখরের নিকট মহেশ্বর-মন্দিরে আশ্রয় লইয়াছিলেন। সরেন্দ্রনাথ তথায় যাইয়া তাঁহার সহিত সাক্ষাৎ করিলেন, এবং তাঁহাকে আশ্রয়দানের ইচ্ছা প্রকাশ করিলেন। কিন্তু অভিমানিনী মহাশ্বেতা দরিদ্রাবস্থায়ও গব্বিতা ছিলেন, সহায়তা গ্রহণ করিতে সম্মত হইলেন না। সরেন্দ্রনাথ বার বার উপরোধ করিলেন, কিন্তু মহাশ্বেতা বার বার অসম্মতি প্রকাশ করিয়া বলিলেন,—রাজা সমরসিংহের বংশ এই দরিদ্রাবস্থায়ও মাননীয়, পরের গাহে আশ্রয় গ্রহণ করিবে না। এ কথায় সরেন্দ্রনাথ অগত্যা উপরোধ হইতে নিরস্ত হইলেন। অবশেষে বলিলেন-আপনার স্বামীর নিকট আমরা অনেক উপকার প্রাপ্ত হইয়াছি, অনেক বিষয়ে ঋণগ্রস্ত আছি, এই অসময়ে যদি কোন প্রত্যুপকার না করিতে পারিলাম, তবে চিরকাল আমার জন্ম বিফল মনে করিব। অতএব যদি আমাদের গহে আশ্রয় গ্রহণ না করেন, বলন, আর কি প্রকারে আপনার উপকার করিতে পারি ? মহাশ্বেতা উত্তর করিলেন,—তবে তোমার জমীদারীর মধ্যে আমাকে থাকিবার স্থান দান কর, আমি বৎসরে বৎসরে তাহার খাজনা দিব, আর কোন নদীতীরে একটী মন্দির নিমাণ করাইয়া দেও, তথায় প্রতিরাত্রে পজো করিব। ইহা ভিন্ন আমার প্রাথনীয় ృని