পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১৫৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
১২৫
মঘরাজের মুকুট প্রেরণ

 প্রতিমা বিসর্জ্জন হইয়া গেল, দেবী চলিয়া গেলেন। উদয়পুর যেন নষ্টশ্রী হইয়া পড়িল, কি অমঙ্গলের আশঙ্কায় রাজপুরী যেন কাঁপিয়া উঠিতেছিল। এইরূপ জনরব শুনা যাইতে লাগিল মন্দিরে দেবতার চক্ষু ছল ছল করিয়া উঠিতেছে, আকাশ হইতে তারা খসিয়া পড়িতেছে, অকারণে শৃগাল কুকুর রোদন করিতেছে।[১] এই অবস্থার মধ্যে চট্টগ্রাম হইতে দুঃসংবাদ আসিল মঘরাজ প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করিয়া চট্টল অধিকার করিয়াছেন। তখনই দুর্গ তোরণে দামামা বাজিয়া উঠিল, সাজ সাজ রব উঠিল! রাজধর, অমর দুর্লভ ও যুঝা সিংহ স্ব স্ব সৈন্যসহ যাত্রা করিলেন। কনিষ্ঠ কুমার যুঝা যেরূপ ক্রোধী তাহাতে তিনি যুদ্ধে যান ইহা মহারাজের ইচ্ছা ছিল না। কিন্তু যুঝাকে ঠেকাইয়া রাখা গেল না। রাজধর হইলেন প্রবীণ সেনাপতি, তাঁহার দুই ভাই অধীনে রহিলেন।

 ত্রিপুর সেনা যখন গড়খাই করিয়া যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হইতেছিল তখন মঘরাজ যেন মহাভয় পাইয়াছেন এরূপ ভান করিয়া যুদ্ধক্ষেত্র হইতে কিঞ্চিৎ হঠিয়া গেলেন। কুমারদের প্রত্যয় হইল মঘরাজ সত্যই ভয় পাইয়াছেন। মঘরাজ জানিতেন যে তিন ভাইয়ের সৈন্য একত্রিত হইয়াছে বটে কিন্তু ইহাদের মনের সমতা নাই, সকলেই স্ব স্ব প্রধান। তাই তিন ভাইয়ের মধ্যে যাহাতে ভাল করিয়া বিবাদ বাধে সেই

  1. দৈবতানি রুদন্তীব স্বিদ্যন্তি প্রচলন্তি চ—ভাগবত ১।১৪।২০