পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১৭৬

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
 
১৪৮
 

কল্যাণমাণিক্য ও
বাদসাহী ফৌজ

রণক্ষেত্র হইতে হঠিয়া গেল। কারণ সম্মুখ সমর ত্যাগ করিয়া সৈন্যেরা পর্ব্বতগাত্রে গা ঢাকা দিয়া রহিল। যখন তোপ দাগা বিরাম হইল তখন গোবিন্দনারায়ণ বুঝিলেন, ত্রিপুর সৈন্য সমূলে বিধ্বস্ত হইয়াছে ভাবিয়া এইবার মোগলেরা তাহাদের গড় ছাড়িয়া অগ্রসর হইতে পারে।

 তখন সন্ধ্যা সমাগত, কল্যাণমাণিক্য শিবিরে বিশ্রাম করিতে করিতে কুলদেবতা স্মরণ করিতেছেন—স্বদেশের স্বাধীনতা বিপন্ন, এ যাত্রা সে স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ থাকিবে কি? গোবিন্দনারায়ণের উপর প্রধান সেনাপতির ভার অর্পণ করিয়া মহারাজ বিশ্রাম করিতেছিলেন, তখন যুদ্ধ থামিয়া গিয়াছে। মহারাজ মুক্ত আকাশে দেখিলেন একটি একটি তারা ফুটিতেছে, ইহারা জয় পরাজয়ের বার্ত্তা বহন করে—ত্রিপুরার ভাগ্যে জয় না পরাজয়?

 গভীর নিশীথে গোবিন্দনারায়ণ মোগল শিবির আক্রমণ করিলেন, ত্রিপুর সৈন্যের অতর্কিত আগমনে মোগল বাহিনী বে-কায়দায় পড়িয়া গেল। সুযোগ বুঝিয়া গোবিন্দনারায়ণ এরূপ প্রবল চাপ দিলেন যে মোগল সৈন্য চূর্ণ বিচূর্ণ হইতে লাগিল। দুর্গ প্রাকারে নাকাড়া বাজিলেও মোগলের সৈন্যসজ্জা ঘটিয়া উঠিল না। চতুর্দ্দিকে বিশৃঙ্খলা, অর্দ্ধসুপ্ত সৈনিকেরা চোখ কচ্‌লাইয়া দেখিল—এ কাহারা? হাতে কৃপাণ তুলিয়া লইবার পূর্ব্বেই তাহাদের ছিন্নমুণ্ড ধূলিতে গড়াইতে লাগিল। গোবিন্দনারায়ণের সমরকৌশলে মোগলেরা সম্পূর্ণরূপে