পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১৮৬

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
 
১৫৮
 

আরাকান রাজ্যে
গোবিন্দমাণিক্য ও সুজা

 সুজা রসাঙ্গরাজের নিকট যে অভ্যর্থনা পাইলেন তাহা দ্বারাই অনুমান করা যায় আরাকান বাস তাঁহার পক্ষে কিরূপ সুখের হইবে। আরাকান রাজ্যের বাহিরে সুজার গতি ঐতিহাসিকেরা জানিতে পারেন নাই, তাই সুজার পরিণাম ইতিহাসে গভীর রহস্যময়। একমাত্র অন্তর্যামীর নিকটই ইহার সন্ধান রহিয়াছে।

 যখন আরাকান-রাজের দরবার ভঙ্গ হইল তখন সুজাগোবিন্দমাণিক্য মঘরাজের নিকট বিদায় চাহিয়া বাহিরে আসিলেন। মঘরাজের প্রতিহারী শুনিতে না পায় এইভাবে রাজভবন হইতে একটু ব্যবধানে আসিয়া সুজা গোবিন্দমাণিক্যের হাত ধরিয়া বলিলেন—“মহারাজ, আপনি আজ আমার মুখ রাখিয়াছেন, যদি আপনি আসন ত্যাগে আমাকে এই সম্মান না দিতেন তবে আমার মর্য্যাদা কোথায় থাকিত? ভাগ্যের তাড়নায় আমি আজ সর্ব্বস্বান্ত, কি দিয়া যে আপনার ঋণ শোধ করিব বুঝিয়া উঠিতে পারি না।” এই বলিয়া সুজা ক্ষণকাল অধোবদনে রহিলেন, তারপর নিজহস্ত হইতে হীরার অঙ্গুরীয় উন্মোচন করিয়া মহারাজের হাতে পরাইরা বলিলেন—“মহারাজ, দুর্ভাগা সুজার স্মরণ-চিহ্নটুকু ধারণ করুন, এই আমার অনুরোধ।” গোবিন্দমাণিক্য সসম্মানে সে অনুরোধ রক্ষা করেন।

 ভাগ্যবিপর্য্যয়ে রাজ্যভ্রষ্ট উভয় নৃপতিরই দিন রসাঙ্গে কাটিতে লাগিল। সুজা একবার শেষ অদৃষ্ট পরীক্ষার জন্য চেষ্টা পাইলেন। তিনি মঘরাজের কন্যার পাণিগ্রহণ করিয়া আরাকানপতির সহিত মেলামেশা করিতে লাগিলেন। রসাঙ্গের