পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১৮৯

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
 
১৬১
 

আরাকান রাজ্যে
গোবিন্দমাণিক্য ও সুজা

এমন অবস্থায় মোগলেরা আর কি করিবে, প্রাণ দেওয়া ছাড়া আর ফিরিবার উপায় রহিল না। মঘরাজের নিকট এ সংবাদ পৌঁছিল, তিনি সুজার চতুরতা বুঝিতে পারিলেন। রাজ্যচ্যুত হইয়া আপন আশ্রয়দাতার সিংহাসন অধিকারেও যখন সুজা উদ্যত হইয়াছে তখন তাঁহাকে ত আর আশ্রয় দেওয়া চলেনা। এই ভাবিয়া সুজাকে বন্দী করিবার জন্য ফৌজ পাঠাইয়া দিলেন। দুর্ভাগা সুজার দুর্ভাগ্য চরমে পৌঁছিয়াছিল, আপন মোগল বাহিনীর পরাজয়বার্ত্তা জানিয়া সুজা সেই রজনীর গভীর অন্ধকারে বেগম পরিভানু ও সাহজাদীসহ রসাঙ্গ ত্যাগ করিলেন। মঘরাজ-সৈন্যে চতুর্দ্দিক ছাইয়া গেল, সুজার খোঁজে ইহারা আতিপাতি করিয়া সমস্ত বন অন্বেষণ করিল কিন্তু সুজা নিরুদ্দেশ হইয়া গেলেন, সুজাকে কোথাও পাওয়া গেল না, সেই রাত্রির অন্ধকারে যেন সুজা চিরতরে মিলাইয়া গেলেন।[১]

  1. রাজমালায় বিবৃত কাহিনী এইরূপ কিন্তু কৈলাস সিংহ প্রণীত পুস্তকে ভিন্ন বিবৃতি রহিয়াছে। মঘরাজ সুজার বেগম ও কন্যাদের প্রতি লোলুপ দৃষ্টি করায় সুজা উহা প্রতিরোধ করিতে যাইয়া মঘরাজের চক্রান্তে জলে ডুবিয়া প্রাণ হারান এবং তৎপর বেগম ও সাহজাদীরা স্বেচ্ছায় মৃত্যু বরণ করেন; সুজার তৃতীয় কন্যা মঘরাজ-অন্তঃপুরে স্থান প্রাপ্ত হন। রাজমালার সহিত এ কাহিনীর পার্থক্য থাকিলেও সুজার পরিণাম যে বিষাদময় ইহাই প্রতীত হয়।
১১