পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/২৫৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
২২৫
কৃষ্ণকিশোরমাণিক্য

 সন্ন্যাসীগণের হাসি থামিল। তাঁহারা সমস্বরে বলিয়া উঠিলেন—“মহারাজ, সুদূর হিমালয় হইতে আমরা আপনার নিকট একটি প্রার্থনা করিতে আসিয়াছি। বলুন, আমরা যাহা চাহিব তাহাই দিবেন।” মহারাজ প্রমাদ গণিলেন—“আপনার কি চাহেন, না জানিয়া কেমন করিয়া কথা দিব?” তখন সন্ন্যাসীদের মধ্যে একজন বলিলেন “আপনি কথা দিন, তারপর আমরা আমাদের কথা বলিব।” পাছে ইহারা রুষ্ট হন এই ভাবিয়া মহারাজ প্রতিশ্রুতি দিলেন। অমনি একজন সন্ন্যাসী প্রায় রুদ্ধকণ্ঠে কহিলেন,—“আমরা মহারাজের প্রসাদ পাইতে আসিয়াছি।” মহারাজ ইহা শুনিয়া একেবারে স্তব্ধ হইয়া গেলেন, তাঁহার মাথায় আকাশ ভাঙ্গিয়া পড়িল। “আপনারা তবে কি আমার মৃত্যু কামনা করিয়া এখানে আসিয়াছেন?” ইহাতে সন্ন্যাসীরা কিছুই বলিলেন না, শুধু মহারাজকে এই কথাটি বলিলেন—“আগামী বৎসর ঠিক এই দিনে আমরা আসিব, ইহার মধ্যে দেখুন আমাদের স্মরণ হয় কিনা।” এই বলার সঙ্গে সঙ্গেই মহারাজ লক্ষ্য করিলেন সন্ন্যাসীদের আকৃতি অস্পষ্ট হইতে লাগিল। সভয়ে মহারাজ দেখিতে লাগিলেন সন্ন্যাসীরা ক্রমে মিলাইয়া গেলেন।

 বৎসর কাটিয়া গেল,—আবার সেই দিন উপস্থিত। চাঁদের আলোতে রাজপ্রাসাদ ঝলমল করিতেছে, তোরণদ্বারে সিপাহীর কড়া পাহারা, যেন কেহ প্রাসাদ অভিমুখে বিনা সংবাদে না আসিতে পারে। মহারাজ একাকী সেই কক্ষে বসিয়া আছেন,

 ১৫