পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/৯৭

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
৬৯
ধন্যমাণিক্যের শাপমোচন

করিলেন। সেনাপতিরা হয়ত ভাবিয়াছিল প্রতাপ আমাদের হাতের পুতুল হইয়া থাকিবে, আর আমরা তাহার নামে রাজ্য শাসন করিব। কিন্তু ব্যাপার অন্যরূপ হইল। প্রতাপ ক্রমেই দুরন্ত হইয়া উঠিতে লাগিল, তাহার দৌরাত্ম্যে সকলে অতিষ্ঠ হইয়া উঠিল। প্রজারা কাঁদিয়া আকুল—হা বিধাতঃ! মহারাজ ধর্ম্মের পরে ত্রিপুরা রাজ্য অধর্ম্মের হাতে আসিয়া পড়িয়াছে, কতকাল এ দুর্জ্জনের শাসন চলিবে?

 কিছুদিন যায়, সেনাপতিরা আর সহ্য করিতে না পারিয়া প্রতাপকে মারিয়া ফেলিল। তখন রাজ-সিংহাসন শূন্য হইয়া পড়িল, সেনাপতিদের মধ্যে কলহ উপস্থিত, কে রাজা হইবে! শ্রেষ্ঠ সেনাপতির সুবুদ্ধি হইল, ধন্য কোথায় আছেন, তাঁহার সিংহাসন তাঁহাকে দিলেই ত সব গোলের অবসান হয়। তখন ধন্যের খোঁজ আরম্ভ হইল, রাজ্য শুদ্ধ হুলস্থূল, ধন্য কোথায় গেল? কিন্তু কেহই কোন সন্ধান দিতে পারিলনা। অবশেষে শ্রেষ্ঠ সেনাপতি বুদ্ধি করিয়া ধাত্রীর নিকট সংবাদ জানিতে চাহিলে ধাত্রী ত প্রমাদ গণিল! ঐ ধাত্রীই ধন্যকে লালন পালন করে। যখন ষড়যন্ত্র আরম্ভ হয় তখন পাছে বা ধন্যের প্রাণ যায় সেই ভয়ে তাঁহাকে লুকাইয়া রাখিবার ব্যবস্থা হয়। পুরোহিতের ঘরে তাঁহাকে ছদ্মবেশী ভৃত্যরূপে রাখিয়া দেওয়া হয়। সেইখানেই সকলের দৃষ্টির আড়ালে ধন্য বড় হইতে থাকে।

 ধাত্রীর মনের ভাব বুঝিয়া সেনাপতি কহিল ধন্যকে সিংহাসনে বসাইবার জন্যই খুঁজিতেছি, কোন আশঙ্কা করিও না।