পাতা:রাজমোহনের স্ত্রী.djvu/১১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

У o 8 রাজমোহনের স্ত্রী কি কারণে একজন সম্পূর্ণ অপরিচিত ব্যক্তির আশ্রয় লইতে সে বাধ্য হইয়াছিল, তাহ মাধব অবগত ছিল না । গুজব যে কিছু না শুনিয়াছিল তাহা নয়, তবে মাতঙ্গিনীকে সে এত ভাল করিয়া জানিত যে, সামান্য কোনও কারণে যে, এই সাহসী যুবতী এই উপায় অবলম্বন করে নাই ইহা নিশ্চিত ; মাতঙ্গিনী সহসী রমণী ও পত্নী স্থলভ ধৈর্য্য হারাইয়া নিজের দুঃখ ডাকিয়! আনিবার পাত্র নয় আশ্রয় ও সাহায্যের প্রয়োজন সত্ত্বেও সে যে কেন ভগিনীর শরণাপন্ন হয় নাই, মাধব তাহা ভাল রকমেই জানিত এবং মনে মনে এই কার্য্যের প্রশংসা করিত । কিন্তু তাহার গৃহত্যাগ করিবার কি হেতু ঘটিতে পারে, তাহা সে ভাবিয়া উঠিতে পারে নাই । সহসা অদ্ভুতভাবে অন্তৰ্দ্ধান ব্যাপারটা তাহার কাছে অধিকতর বিস্ময়কর ঠেকিয়াছিল। মাতঙ্গিনী যে তাহার সম্পত্তি অপহরণ করিবার উদ্দেশ্যে ডাকাতদের মন্ত্রণার কথা জানিতে পারিয়া তাহারা কাজ হাসিল করিবার পূৰ্ব্বেই যথাসময়ে তাহাকে তাহা জ্ঞাপন করাইয় তাহাদের উদেশ্ব পণ্ড করিয়াছিল—এই কথা ভাবিয়া মাতঙ্গিনীর ভাগ্য সম্বন্ধে সহস্র দুশ্চিন্তা তাহাকে পীড়া দিতেছিল ; এক-একবার সে এক-একরকম ভাবে, পরক্ষণেই অবিশ্বাস্ত ও অসম্ভব জ্ঞানে সে চিন্তাকে দূরে ঠেলিয়া দেয়। তাহার চরিত্র সম্বন্ধে সে বিশেষভাবে জ্ঞাত ছিল বলিয়াই এক বিষয়ে সে নিশ্চিন্ত হইল যে, মাতঙ্গিনীর দুর্ভাগ্য যে রূপ লইয়াই আসুক, কোনও পাপ উদ্দেশ্য লইয়া সে পতিগৃহ ত্যাগ করে নাই । বিপদ যে তাহার একটা কিছু ঘটিয়াছে সে সম্বন্ধেও তাহার কোনই সন্দেহ ছিল না, তাই সে অসহ মানসিক যন্ত্রণায় পীড়িত হইতেছিল । মাতঙ্গিনী সম্বন্ধে তাহার মনে যে গভীর অথচ মধুর ভাব স্বতই জাগিতেছিল, বহুকষ্টে দমন করিতে হইতেছিল বলিয়া বহ্নির মত তাহা তাহার বুকে জলিতে লাগিল। সেই বিদায়-দৃশ্বের স্মৃতি তাহার মনে স্পষ্ট হইয়া উঠিতেছিল, মাতঙ্গিনীর প্রত্যেকটি কথা স্মরণে উদিত হইয় তাহার চক্ষু অশ্রুসজল