প্রতিবেশীরা কি আবার মকদ্দমা বাধাইতে ছাড়িবে? হ্যাঁ, তারপর? মাধব পড়িতে লাগিল—
“নিতান্ত দুঃখের সহিত জানাইতেছি যে, অদ্য অছির সাহায্যে হুজুরের খুড়ীমাতা সদর আমীনের আদালতে হুজুরের নামে এই মর্ম্মে এক মকদ্দমা দায়ের করিয়াছেন যে, তাঁহার স্বামীর উইল জাল এবং তিনি ওয়াশীলাৎ সহ তাহার সম্পত্তি ফিরিয়া পাইবার দাবি করেন।”
খুড়ীমা!··· বিহ্বল মাধবের হাত হইতে চিঠিখানা পড়িয়া গেল। খুড়ীমা! হায় ভগবান! আমার সমস্ত সম্পত্তি ফিরাইয়া চান! আমি জাল করিয়াছি। হতভাগীকে লাথি মারিয়া বাড়ি হইতে দূর করিয়া দিব।
মাধব কয়েক মুহূর্ত্ত দাঁড়াইয়া দাঁড়াইয়া কি ভাবিল এবং দাঁড়াইয়া দাঁড়াইয়া রাগে ফুলিতে লাগিল, শেষে নিজেকে কিঞ্চিৎ শান্ত করিয়া সে চিঠিখানা কুড়াইয়া লইয়া পড়িতে লাগিল।
“তাহাকে এইরূপ করিবার পরামর্শ কে দিয়াছে, প্রত্যক্ষভাবে অবগত নহি; অধীন অনুসন্ধানের ত্রুটি করে নাই। কারণ, কেহ যে ইহার পিছনে আছে সে বিষয়ে সন্দেহ থাকিতে পারে না, এবং সে একজনের নামও শুনিয়াছে। এই কার্য্যের সঙ্গে মহদাশয়েরা সব যুক্ত আছেন।”
মাধব ভাবিল, পরামর্শদাতা? কাহারা হইতে পারে? সে অনুমান করিবার চেষ্টা করিতে লাগিল। প্রথমে মনে হইল একজন প্রতিবেশী জমিদারের কথা। তারপর আর একজনের কথা মনে হইল, কিন্তু কোনও নামটাই সম্ভব বলিয়া বোধ হইল না। মাধব পড়িতে লাগিল—
“কিন্তু হুজুরের ভয় পাইবার কোনই কারণ নাই। আমি জানি উইল জাল নহে এবং যতোধর্ম্মস্ততোজয়ঃ। কিন্তু তবুও সাবধান হইতে হইবে। জজ-কোর্টের অমুক বাবুকে ও অমুক উকিলকে ওকালতনামা দিতে হইবে এবং প্রয়োজন হইলে সদর আদালত হইতেও একজনকে নিযুক্ত করা প্রয়োজন। উভয় পক্ষের সওয়ালজবাবের দিন এবং শেষ