পাতা:রাজমোহনের স্ত্রী.djvu/৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○& রাজমোহনের স্ত্রী অত্যন্ত সস্তপণে ঘুমন্ত লোক যে ভাবে শয়ন করে, ঠিক সেইভাবে শুইয়৷ পড়িয়া চক্ষু মুদ্রিত করিল। রাজমোহন তাহার শয়ন-কক্ষের দ্বার অবধি আসিয়া মুদুভাবে তাহাতে আঘাত করিল, কেহ দরজা খুলিল না। ধীরে ধীরে সে স্ত্রীর নাম ধরিয়া ডাকিল। তাহাতেও কোন ফল হইল না। রাজমোহন বুঝিল, মাতঙ্গিনী নিশ্চয়ই ঘুমাইয়া পড়িয়াছে। তাহার উপর রাগ করিয়া চুপ করিয়া থাকাও অসম্ভব নয় ভাবিয়া সে ঘরে ঢুকিয়া দেখিবে স্থির করিল। রাগের কারণ তো যথেষ্ট ঘটিয়াছে । রাজমোহন রান্নাঘরে ঢুকিয়া প্রদীপ জালিল এবং সেই প্রদীপ হাতে ফিরিয়া শোবার ঘরের দরজার পাশে প্রদীপ নামাইল, তারপর এক পায়ের সাহায্যে দরজার এক পাল্লা চাপিয়া ধরিয়া এক হাত দিয়া অন্য পাল্লাটি সজোরে টানিতেই দুই পাল্লার মাঝখানে খানিকট ফাক হইল । রাজমোহন সেই পথে আণ্ডল ঢুকাইয়া পরীক্ষা করিল, কাঠের বড় হড়কে, ছোট থিল এবং লোহার ছিটকিনি সবগুলিই বন্ধ আছে কি না ! শুধু কাঠের বড় হুড়কোটিই লাগানো ছিল ; রাজমোহন বুঝিল যে তাহাকে তাহার ইচ্ছামত ঘরে ঢুকিতে দিবার জন্তই মাতঙ্গিনী খিল সম্বন্ধে সাবধান হয় নাই—বাহির হইতে হুড়কে খুলিয়া ফেলা যায়। রাজমোহন দুইটি আণ্ডল ঢুকাইয় হুড়কে উপরে তুলিয়া আঙল সরাইয় তাহা খুলিয় ফেলিল এবং দীপহস্তে ঘরের ভিতর ঢুকিল । রাজমোহন দেখিল, তাহার স্ত্রীর দেহ শয্যায় এলানে, সে ঘুমাইতেছে সে কয়েকবার এমন মুহুস্বরে মাতঙ্গিনীর নাম ধরিয়া ডাকিল, ঘুমাইয় থাকিলে সে যাহাতে না জাগিয়া পড়ে ; অতি মধুর কণ্ঠে ডাকিল। রাগ ব অভিমানের বশে যদি সে চুপ করিয়া থাকে, মিষ্টম্বর শুনিয়া রাগ অভিমা ভুলিয়া হয়তো সে জবাব দিবে। মাতঙ্গিনী তবুও নীরব, তাহার নিঃশ্বা ঘন হইয়া পড়িতেছে । মাতঙ্গিনীর ঘুমের ভান করিবার কোনই কার রাজমোহন ভাবিয়া পাইল না, সে তাহার ঘুম সম্বন্ধে নিশ্চিন্ত হইয়া ঘরে