—কাউকে না।
—মথুর ঘোষ, নয়?
—হতে পারে, না হতেও পারে। আচ্ছা, বাক্সটা কি রকমের?
—আমাকে দিচ্ছ কি?
—কি চাও তুমি?
—নগদ দুশো টাকা।
—দুটো কি তিনটে কথার জন্যে দুশো টাকা? বড্ড বেশি। কিন্তু আমাদের কাজও তো ঢের।—দস্যু যেন নিজের মনেই বলিতে লাগিল, সমস্ত রাত ধ’রে একটা কাগজের টুকরো খোঁজা! বাক্সটা নিশ্চয়ই শোবার ঘরের লোহার সিন্দুকে আছে; বাক্সটা দেখতে কেমন জানতে পারলে আর বের করা কঠিন হবে না। তোমার সঙ্গে ছ্যাঁচড়ামি করা বৃথা— বেশ, তোমার কথাতেই রাজি।
রাজমোহন বলিল, বাক্সটা হাতির দাঁতের, ডালার ওপর সোনা দিয়ে লেখা তিনটি ইংরেজী অক্ষর—তার নামের প্রথম অক্ষর তিনটি।
দস্যু বলিল, সবই তো পাকাপাকি কথা হ’ল। এখন তুমি আমার সঙ্গে এস, দলের লোকের সঙ্গে কথা বলা যাক। আমরা একটা জায়গা ঠিক ক’রে দেব, তুমি সেখানে আমাদের সঙ্গে যোগ দেবে। এস, আর দেরি করার সময় নেই, চাঁদ ডুববার সঙ্গে সঙ্গে কাজ আরম্ভ করতে হবে। গ্রীষ্মকালের রাত—বড্ড শিগগির ফুরিয়ে যায়।
এই বলিয়া দস্যু ও তাহার সহকারী ধীরে ধীরে দেওয়ালের ছায়ার আড়াল ছাড়িয়া পরস্পর কিছু ব্যবধান রাখিয়া বনের পথ ধরিয়া চলিতে চলিতে অচিরকালমধ্যে এক অন্ধকার স্থানে আসিয়া মিলিত হইল। এদিকে মাতঙ্গিনী বিস্ময়ে ও আতঙ্কে বিমূঢ় হইয়া মেঝেতে লুটাইয়া পড়িল।