দিল। দেখিলেন চতুর্দিকে পাহারা, কোনো দিকে ছিদ্র নাই। অবশেষে রঘুপতির নিকট গিয়া কহিলেন, “যাত্রার সময় হইয়াছে, যুবরাজকে সংবাদ দিন।”
রঘুপতি কহিলেন, “মহারাজ যাইবেন না স্থির করিয়াছেন।”
বিল্বন কহিলেন, “আমি একবার তাঁহার সহিত সাক্ষাৎ করিতে ইচ্ছা করি।”
রঘুপতি। সাক্ষাৎ হইবে না তিনি বলিয়া দিয়াছেন।
বিল্বন কহিলেন, “মহারাজ গোবিন্দমাণিক্যের পত্রের উত্তর চাই।”
রঘুপতি। পত্রের উত্তর ইতিপূর্বে আর-একবার দেওয়া হইয়াছে।
বিল্বন। আমি তাঁহার নিজমুখে উত্তর শুনিতে চাই।
রঘুপতি। তাহার কোনো উপায় নাই।
বিল্বন বুঝিলেন বৃথা চেষ্টা; কেবল সময় ও বাক্য-ব্যয়। যাইবার সময় রঘুপতিকে বলিয়া গেলেন, “ব্রাহ্মণ, এ কী সর্বনাশ-সাধনে তুমি প্রবৃত্ত হইয়াছ! এ তো ব্রাহ্মণের কাজ নয়।”
ষট্ত্রিংশ পরিচ্ছেদ
বিল্বন ফিরিয়া গিয়া দেখিলেন, ইতিমধ্যে রাজা কুকিদের বিদায় করিয়া দিয়াছেন। তাহারা রাজ্যমধ্যে উপদ্রব আরম্ভ করিয়া দিয়াছিল। সৈন্যদল প্রায় ভাঙিয়া দিয়াছেন। যুদ্ধের উদ্যোগ বড়ো একটা কিছু নাই। বিল্বন ফিরিয়া আসিয়া রাজাকে সমস্ত বিবরণ বলিলেন।
রাজা কহিলেন, “তবে ঠাকুর, আমি বিদায় হই। নক্ষত্রের জন্য রাজ্য ধন রাখিয়া দিয়া চলিলাম।”
বিল্বন কহিলেন, “অসহায় প্রজাদিগকে পরহস্তে ফেলিয়া দিয়া তুমি পলায়ন করিবে, ইহা স্মরণ করিয়া আমি কোনোমতেই প্রসন্ন মনে বিদায় দিতে পারি না মহারাজ! বিমাতার হস্তে পুত্রকে সমর্পণ করিয়া ভারমুক্ত