হরিণশিশুর দিকে যেমন একদৃষ্টিতে চায়, রঘুপতি তেমনি নক্ষত্রের দিকে চাহিলেন।
নক্ষত্ররায় তাড়াতাড়ি বলিয়া উঠিলেন, “না, আমি না।” কিন্তু কিছুতেই রঘুপতির মুষ্টি ছাড়াইতে পারিলেন না।
রঘুপতি বলিলেন, “তবে বলো সে কে?”
নক্ষত্ররায় বলিয়া ফেলিলেন, “সে ধ্রুব।”
রঘপতি বলিলেন, “ধ্রুব কে?”
নক্ষত্ররায়, “সে একটি শিশু—”
রঘুপতি বলিলেন, “আমি জানি, তাহাকে জানি। রাজার নিজের সন্তান নাই, তাহাকেই সন্তানের মতো পালন করিতেছেন। নিজের সন্তানকে লোকে কেমন ভালোবাসে জানি না, কিন্তু পালিত সন্তানকে প্রাণের চেয়ে ভালোবাসে তাহা জানি। আপনার সমুদয় সম্পদের চেয়ে তাহার সুখ রাজার বেশি মনে হয়। আপনার মাথায় মুকুটের চেয়ে তাহার মাথায় মুকুট দেখিতে রাজার বেশি আনন্দ হয়।”
নক্ষত্ররায় আশ্চর্য হইয়া বলিয়া উঠিলেন, “ঠিক কথা।”
রঘুপতি কহিলেন, “ঠিক কথা নয় তো কী? রাজা তাহাকে কতখানি ভালোবাসেন তাহা কি আমি জানি না? আমি কি বুঝিতে পারি না? আমিও তাহাকেই চাই।”
নক্ষত্ররায় হাঁ করিয়া রঘুপতির দিকে চাহিয়া রহিলেন। আপন মনে বলিলেন, “তাহাকেই চাই।”
রঘুপতি কহিলেন, “তাহাকে আনিতেই হইবে— আজই আনিতে হইবে— আজ রাত্রেই চাই।”
নক্ষত্ররায় প্রতিধ্বনির মতো কহিলেন, “আজ রাত্রেই চাই।”
নক্ষত্ররায়ের মুখের দিকে কিছুক্ষণ চাহিয়া গলার স্বর নামাইয়া রঘুপতি বলিলেন, “এই শিশুই তোমার শত্রু, তাহা জান? তুমি