খুড়াসাহেব চমকিয়া উঠিলেন– তিনি প্রায় ভুলিয়া গিয়াছিলেন যে তাঁহার নাম খড়্গসিংহ।
বিক্রমসিংহ কহিলেন, “খড়্গসিংহ, এতদিন পরে তুমি কি আবার শিশু হইয়াছ!”
খুড়াসাহেব নতশিরে চুপ করিয়া রহিলেন।
বিক্রমসিংহ। খুড়াসাহেব, তুমি এই কাজ করিলে! তোমার হাতে আজ বিজয়গড়ের অপমান হইল!”
খুড়াসাহেব চুপ করিয়া দাঁড়াইয়া রহিলেন, তাঁহার হাত থরথর করিয়া কাঁপিতে লাগিল। কম্পিত হস্তে কপাল স্পর্শ করিয়া মনে মনে কহিলেন, “অদৃষ্ট!”
বিক্রমসিংহ কহিলেন, “আমার দুর্গ হইতে দিল্লীশ্বরের শত্রু পলায়ন করিল! জানো তুমি আমাকে দিল্লীশ্বরের নিকটে অপরাধী করিয়াছ!” খুড়াসাহেব কহিলেন, “আমিই একা অপরাধী। মহারাজ অপরাধী এ কথা দিল্লীশ্বর বিশ্বাস করিবেন না।”
বিক্রমসিংহ বিরক্ত হইয়া কহিলেন, “তুমি কে? তোমার খবর দিল্লীশ্বর কী রাখেন? তুমি তো আমারই লোক। এ যেন আমি নিজের হাতে বন্দীর বন্ধন মোচন করিয়া দিয়াছি।”
খুড়াসাহেব নিরুত্তর হইয়া রহিলেন। তিনি চোখের জল আর সমালাইতে পারিলেন না।
বিক্রমসিংহ কহিলেন, “তোমাকে কী দণ্ড দিব?”
খুড়াসাহেব। মহারাজের যেমন ইচ্ছা।
বিক্রমসিংহ। তুমি বুড়ামানুষ, তোমাকে অধিক আর কী দণ্ড দিব। নির্বাসনদণ্ডই তোমার পক্ষে যথেষ্ট।
খুড়াসাহেব বিক্রমসিংহের পা জড়াইয়া ধরিলেন; কহিলেন,