হইতে রঘুপতি আসিয়া নক্ষত্ররায়কে স্পর্শ করিলেন। নক্ষত্ররায় চমকিয়া উঠিলেন। রঘুপতি মৃদুগম্ভীর স্বরে কহিলেন, “যাত্রার সমস্ত প্রস্তুত।”
নক্ষত্ররায় জোড়হাতে অত্যন্ত কাতর স্বরে কহিলেন, “ঠাকুর, আমাকে মাপ করো ঠাকুর– আমি কোথাও যাইতে চাহি না। আমি এখানে বেশ আছি।
রঘুপতি একটি কথা না বলিয়া নক্ষত্ররায়ের মুখের দিকে তাঁহার অগ্নিদৃষ্টি স্থির রাখিলেন। নক্ষত্ররায় চোখ নামাইয়া কহিলেন, “কোথায় যাইতে হইবে?”
রঘুপতি। সে কথা এখন হইতে পারে না।
নক্ষত্র। দাদার বিরুদ্ধে আমি কোনো চক্রান্ত করিতে পারিব না।
রঘুপতি জ্বলিয়া উঠিয়া কহিলেন, “দাদা তোমার কী মহৎ উপকারটা করিয়াছেন শুনি।”
নক্ষত্র মুখ ফিরাইয়া জানালার উপর আঁচড় কাটিয়া বলিলেন, “আমি জানি, তিনি আমাকে ভালোবাসেন।”
রঘুপতি তীব্র শুষ্ক হাস্যের সহিত কহিলেন, “হরি হরি, কী প্রেম! তাই বুঝি নির্বিঘ্নে ধ্রুবকে যৌবরাজ্যে অভিষিক্ত করিবার জন্য মিছা ছুতা করিয়া দাদা তোমাকে রাজ্য হইতে তাড়াইলেন– পাছে রাজ্যের গুরুভারে ননির পুতলি স্নেহের ভাই কখনো ব্যথিত হইয়া পড়ে। সে রাজ্যে আর কি কখনো সহজে প্রবেশ করিতে পারিবে নির্বোধ?”
নক্ষত্ররায় তাড়াতাড়ি বলিলেন, “আমি কি এই সামান্য কথাটা আর বুঝি না! আমি সমস্তই বুঝি– কিন্তু আমি কী করিব বলো ঠাকুর, উপায় কী?”
রঘুপতি। সেই উপায়ের কথাই তো হইতেছে। সেইজন্যই তো আসিয়াছি। ইচ্ছা হয় তো আমার সঙ্গে চলিয়া আইস, নয় তো এই