ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ।
পরিধেয় বস্ত্র, ছত্র, যষ্টি, চন্দনকাষ্ঠ প্রভৃতি নিতান্ত প্রয়োজনীয় দ্রব্য সঙ্গে লইয়া অনন্ত মিশ্র গৃহিণীর নিকট হইতে বিদায় লইয়া উদয়পুর যাত্রা করিলেন। গৃহিণী বড় পীড়াপীড়ি কবিয়া ধরিল, “কেন যাইবে?” মিশ্রঠাকুর বলিলেন, “রাণার কাছে কিছু বৃত্তি পাইব।” গৃহিণী তৎক্ষণাৎ শান্ত হইলেন; বিরহযন্ত্রণা আর তাঁহাকে দাহ করিতে পারিল না, অর্থলাভের আশাস্বরূপ শীতলবারি প্রবাহে সে প্রচণ্ড বিচ্ছেদবহ্ণি বার কত ফোঁস ফোঁস করিয়া নিবিয়া গেল। মিশ্রঠাকুর একাকী যাত্রা করিলেন।
পথ অতি দুর্গম—বিশেষ পার্ব্বত্য পথ বন্ধুর, এবং অনেক স্থানে আশ্রয়শূন্য। একাহারী ব্রাহ্মণ যে দিন যেখানে আশ্রয় পাইতেন সেদিন সেখানে আতিথ্য স্বীকার করিতেন; দিনমানে পথ অতিবাহন করিতেন। পথে কিছু দস্যুভয় ছিল—ব্রাহ্মণের নিকট রত্নবলয় আছে বলিয়া ব্রাহ্মণ কদাপি একাকী পথ চলিতেন না। সঙ্গী জুটিলে চলিতেন। সঙ্গী ছাড়া হইলেই আশ্রয় খুঁজিতেন। একদিন রাত্রে এক দেবালয়ে আতিথ্য স্বীকার করিয়া, পরদিন প্রভাতে গমনকালে, তাঁহাকে সঙ্গ খুঁজিতে হইল না। চারিজন বণিক্ ঐ দেবালয়ের অতিথিশালায় শয়ন করিয়াছিল, প্রভাতে উঠিয়া তাহারাও পার্ব্বত্য পথে আরোহণ করিল। ব্রাহ্মণ দেখিয়া উহারা জিজ্ঞাসা করিল, “তুমি কোথা যাইবে?” ব্রাহ্মণ বলিলেন “আমি উদয়পুর যাইব।” বণিকেরা বলিল, “আমরাও উদয়পুর খাইব। ভাল