পাতা:রাজসিংহ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চতুর্দ্দশ পরিচ্ছেদ।
৬১

আজ্ঞা দিলেন; তখন অকস্মাৎ মুক্তপথতড়াগের জলের ন্যায় সেই অশ্বারোহিশ্রেণী প্রবাহিত হইল; বল্গা দংশিত করিয়া, নাচিতে নাচিতে, অশ্বশ্রেণী চলিল—অশ্বারোহীদিগের অস্ত্রের ঝঞ্ঝনা বাজিল।

 অশ্বারোহিগণ প্রভাতবায়ুপ্রফুল্ল হইয়া কেহ কেহ গান করিতেছিল। শিবিকার পশ্চাতেই যে অশ্বারোহিণ ছিল, তাহার মধ্যে অগ্রবর্ত্তী একজন গায়িতেছিল—যাহা গায়িতেছিল, তাহার অনুবাদ, যথা—

যারে ভাবি দূরে সে সতত নিকটে।
প্রাণ গেলে তবু সে যে রাখিবে সঙ্কটে।

 রাজকুমারীর কর্ণে সে গীত প্রবেশ করিল। তিনি ভাবিলেন, “হায়! যদি শিপাহীর গীত মতা হইত!” রাজকুমারী তখন রাজসিংহকে ভাবিতেছিলেন। তিনি জানিতেন না, যে আঙ্গুলকাটা মাণিকলাল তাঁহার পশ্চাতে এই গীত গায়িতেছিল। মাণিকলাল, যত্ন করিয়া শিবিকার পশ্চাতে স্থানগ্রহণ করিয়াছিল।


চতুর্দ্দশ পরিচ্ছেদ।

 এদিকে নির্ম্মলকুমারীর বড় গোলমাল বাঁধিল। চঞ্চল ত রত্নখচিত শিবিকারোহণে চলিয়া গেল—আগে পিছে দুই সহস্র কুমারপ্রতিম অশ্বারোহী আল্লার মহিমার শব্দে রূপনগরের