এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
রাজসিংহ
পুতুল নয়–ঐ অতিদীর্ঘ কৃষ্ণতার, চঞ্চল, সজল, বৃহচ্চক্ষুর্দ্বয় তাহার দিকে চাহিয়া হাসিতেছে।
বুড়ী অবাক হইল–এর ওর তার মুখপানে চাহিতে লাগিল–কিছু ভাবিয়া ঠিক পাইল না। বিকলচিত্তে রসিকা রমণীমণ্ডলীর মুখপানে চাহিয়া বৃদ্ধা হাঁপাইতে হাঁপাইতে বলিল, “হাঁ গা, তোমরা বল না গা?” এক সুন্দরী হাসি রাখিতে পারিল না–রসের উৎস উছলিয়া উঠিল–হাসির ফোয়ারার মুখ আপনি ছুটিয়া গেল–যুবতী হাসিতে হাসিতে লুটাইয়া পড়িল। সে হাসি দেখিয়া বিস্ময়বিহ্বলা বৃদ্ধা কাঁদিয়া ফেলিল।
তখন সেই প্রতিমা কথা কহিল। অতি মধুরস্বরে জিজ্ঞাসা করিল, “আয়ি, কাঁদিস কেন গো?”
তখন বুড়ী বুঝিল যে, এটা গড়া পুতুল নহে। আদত মানুষ–রাজমহিষী বা রাজকুমারী হইবে। বুড়ী তখন সাষ্টাঙ্গে প্রণিপাত করিল। এ প্রণাম রাজকুলকে নহে–এ প্রণাম সৌন্দর্যকে। বুড়ী যে সৌন্দর্য দেখিল, তাহা দেখিয়া প্রণত হইতে হয়।