পাতা:রাজসিংহ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সপ্তদশ পরিচ্ছেদ।
৮৫

সঞ্চিত প্রণয়ের কথা কিছু নাই—“হে প্রাণ।” “হে প্রাণাধিক।” সে সব কিছুই নাই— ধিক্!


অষ্টাদশ পরিচ্ছেদ।

 যুদ্ধক্ষেত্রের নিকটবর্ত্তী এক নিভৃত স্থানে নির্ম্মলকে নামাইয়া দিয়া, তাহাকে সেইখানে বসিয়া থাকিতে উপদেশ দিয়া, মাণিকলাল, যেখানে রাজসিংহের সঙ্গে মবারকের সুদ্ধ হইতেছিল, একেবারে সেইখানে, মবারকের পশ্চাতে, উপস্থিত হইল।

 মাণিকলাল দেখিয়া যায় নাই যে, তৎপ্রদেশে যুদ্ধ উপস্থিত হইয়াছে। কিন্তু রন্ধ্রপথে রাজসিংহ প্রবেশ করিয়াছেন; হঠাৎ তাহার শঙ্কা হইয়াছিল যে মোগলেরা রন্ধ্রের এই মুখ বন্ধ করিয়া রাজসিংহকে বিনষ্ট করিবে। সেই জন্যই সে রূপনগরের সৈন্যসংগ্রহার্থে গিয়াছিল। এবং সেই জন্য সে প্রথমেই এইদিকে রূপনগরের সেনা লইয়া উপস্থিত হইল। আসিয়াই বুঝিল যে রাজপুতগণের নাভিশ্বাস উপস্থিত বলিলেই হয়—মৃত্যুর আর বিলম্ব নাই। তখন, মাণিকলাল মবারকের সেনার প্রতি অঙ্গুলিনির্দ্দেশ করিয়া দেখাইয়া বলিল, ঐ সকল দস্যু! উহাদিগকে মারিয়া ফেল।”

 সৈনিকেরা কেহ কেহ বলিল, “উহারা যে মুসলমান।”

 মাণিকলাল বলিল, “মুসলমান কি লুঠেরা হয় না? হিন্দুই কি যত দুষ্ক্রিয়াকারী? মার।”