পাতা:রাজসিংহ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ।

রূপ; তিনি গুণ। যেখানে সে অনন্ত রূপের ছায়া দেখা যায়, সেইখানেই মনুষ্যমস্তক আপনি প্রণত হয়। অতএব বুড়ী সাষ্টাঙ্গ প্রণাম করিল।


দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ।

 এই ভুবনমোহিনী সুন্দরী, যারে দেখিয়া চিত্রবিক্রেত্রী প্রণাম করিল, রূপনগরের রাজার কন্যা চঞ্চলকুমারী। যাহারা এতক্ষণ বৃদ্ধাকে লইয়া রঙ্গ করিতেছিল, তাহারা তাঁহার সখীজন এবং দাসী। চঞ্চলকুমারী সেই ঘরে প্রবেশ করিয়া সেই রঙ্গ দেখিয়া নীরবে হাস্য করিতেছিলেন। এক্ষণে প্রাচীনকে মধুরস্বরে জিজ্ঞাসা করিলেন, “তুমি কে গো?”

 সখীগণ পরিচয় দিতে ব্যস্ত হইল। “উনি তসবীর বেচিতে আসিয়াছেন।”

 চঞ্চলকুমারী বলিল, “তা তোমরা এত হাসিতেছিলে কেন?”

 কেহ কেহ কিছু কিছু অপ্রতিভ হইল। যিনি সহচরীকে ঝাড়ুদারি রসিকতাটা করিয়াছিলেন তিনি বলিলেন,

 “আমাদের দোষ কি? আয়ি বুড়ী যত সেকেলে বাদশাহের তসবীর আনিয়া দেখাইতেছিল—তাই আমরা হাসিতেছিলাম— আমাদের রাজা রাজড়ার ঘরে আক্‌বর বাদশাহ্ কি জাঁহাগীর বাদশাহের তসবীর কি নাই?”

 “বৃদ্ধা কহিল ’থাক্‌বে না কেন মা? একখানা থাকিলে কি