পাতা:রাজা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্কুলের মধ্যে দিয়ে, পাপের মধ্যে দিয়ে, যে অদ্বিাহ ঘটালে, যে বিষম যুদ্ধ ৰাখিয়ে দিলে, অন্তরে বাহিরে যে ঘোর অশান্তি জাগিয়ে তুললে তাতেই তো তাকে সত্য মিলনে পৌছিয়ে দিলে। প্রলয়ের মধ্যে দিয়ে স্বষ্টির পথ। তাই উপনিষদে আছে তিনি তাপের দ্বারা তপ্ত হয়ে এই সমস্তকিছু স্বষ্টি করলেন । আমাদের আত্মা যা স্বষ্টি করছে তাতে পদে পদে ব্যথা । কিন্তু তাকে যদি ব্যথাই বলি তবে শেষ কথা বলা হল না, সেই ব্যখাতেই সৌন্দর্য, তাতেই আনন্দ ।” অরূপরতনের ভূমিকায় (মাঘ ১৩২৬ ) রবীন্দ্রনাথ লিখিয়াছেন— "সুদর্শন রাজাকে বাহিরে খুজিয়াছিল। যেখানে বস্তকে চোখে দেখা যায়, হাতে ছোওয়া যায়, ভাণ্ডারে সঞ্চয় করা যায়, যেখানে ধন জন খ্যাতি, সেইখানে সে বরমাল্য পাঠাইয়াছিল। বুদ্ধির অভিমানে সে নিশ্চয় স্থির করিয়াছিল যে, বুদ্ধির জোরে সে বাহিরেই জীবনের সার্থকতা লাভ করিবে । তাহার সঙ্গিনী সুরক্ষমা তাহাকে নিষেধ করিয়াছিল। বলিয়াছিল— অস্তরের নিভৃত কক্ষে যেখানে প্ৰভু স্বয়ং আসিয়া আহবান করেন সেখানে তাহাকে চিনিয়া লইলে তবেই বাহিরে সর্বত্র তাহাকে চিনিয়া লইতে ভুল হইবে না ; নছিলে যাহারা মায়ার দ্বারা চোখ ভোলায় তাহাদিগকে রাজা বলিয়া ভুল হইবে। সুদর্শন এ কথা মানিল না । সে সুবর্ণের রূপ দেখিয়া তাহার কাছে মনে মনে আত্মসমপণ করিল। তখন কেমন করিয়া তাহার চারি দিকে আগুন লাগিল, অস্তরের রাজাকে ছাড়িতেই কেমন করিয়া তাহাকে লইয়া ৰাহিরের নানা মিথ্যা-রাজার দলে লড়াই বাধিয়া গেল— সেই অগ্নিদাহের ভিতর দিয়া কেমন করিয়া আপন রাজার সহিত তাহার পরিচয় ঘটিল, কেমন করিয়া দুঃখের আঘাতে তাহার অভিমান ক্ষয় হইল এবং অবশেষে কেমন করিয়া হার মানিয়া প্রাসাদ ছাড়িয়া 33bo