পাতা:রাজা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সুদৰ্শন। আচ্ছ, আমি জিজ্ঞাসা করি— এই অন্ধকারের মধ্যে তুমি আমাকে দেখতে পাও? রাজা । পাই বৈকি । সুদৰ্শন । কেমন করে দেখতে পাও? আচ্ছা, কী দেখ ? রাজা । দেখতে পাই যেন অনস্ত আকাশের অন্ধকার আমার আনন্দের টানে ঘুরতে ঘুরতে কত নক্ষত্রের আলো টেনে নিয়ে এসে একটি জায়গায় রূপ ধরে দাড়িয়েছে। তার মধ্যে কত যুগের ধ্যান, কত আকাশের আবেগ, কত ঋতুর উপহার ! সুদৰ্শন । আমার এত রূপ! তোমার কাছে যখন শুনি বুক ভরে ওঠে । কিন্তু ভালো করে প্রত্যয় হয় না ; নিজের মধ্যে তো দেখতে পাই নে । রাজা । নিজের আয়নায় দেখা যায় না— ছোটো হয়ে যায়। আমার চিত্তের মধ্যে যদি দেখতে পাও তো দেখবে সে কত বড়ো ! আমার হৃদয়ে তুমি যে আমার দ্বিতীয়, তুমি সেখানে কি শুধু তুমি! সুদৰ্শন । বলো বলো, এমনি করে বলে । আমার কাছে তোমার কথা গানের মতো বোধ হচ্ছে— যেন অনাদিকালের গান, যেন জন্মজন্মান্তর শুনে এসেছি। সে কি তুমিই শুনিয়েছ, আর আমাকেই শুনিয়েছ ? না, যাকে শুনিয়েছ সে আমার চেয়ে অনেক বড়ো, অনেক সুন্দর ? তোমার গানে সেই আলোকসুন্দরীকে দেখতে পাই— লে কি আমার মধ্যে, না, তোমার মধ্যে ? তুমি আমাকে যেমন করে দেখছ তাই একবার এক নিমেষের জন্ত আমাকে দেখিয়ে দাও-না ! তোমার কাছে অন্ধকার বলে কি কিছুই নেই ? সেইজন্তেই তো তোমাকে কেমন আমার ভয় করে । এই যে কঠিন কালো লোহার মতো অন্ধকার— যা আমার উপর ঘুমের মতো, মুছার মতে, মৃত্যুর মতে, তোমার দিকে 为●