পাতা:রাজা প্রজা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পথ ও পাথেয়। জেলে প্রতিদিন জাল ফেলে তাহার জালে মাছ ওঠে। একদিন জাল ফেলিতেই হঠাৎ একটা ঘড়া উঠিল, এবং ঘড়ার মুখ যেমন খুলিল অমনি তাহার ভিতর হইতে পুঞ্জ পুঞ্জ ধোয়ার আকার ধরিয়া একটা দৈত্য বাহির হইয়া পড়িল, আরব্য উপন্যাসে এম্নি একটা গল্প আছে। আমাদের খবরের কাগজ প্রতিদিন খবর টানিয়া আনে ; কিন্তু তাহার জালে যে সেদিন এমন একটা ঘড়ী ঠেকিবে, এবং ঘড়ার মধ্য হইতে এত বড় একটা ত্ৰাসজনক ব্যাপার বাহির হইয়া পড়িবে তাহ আমরা কোনো দিন প্রত্যাশাও করিতে পারি নাই । নিতান্তই ঘরের দ্বারের কাছ হইতে এমন একটা রহস্ত হঠাৎ চক্ষের নিমিষে উদঘাটিত হইয়া পড়িলে সমস্ত দেশের লোকের মনে যে আন্দোলন উপস্থিত হয় সেই সুদূরব্যাপী চাঞ্চল্যের সময় কথার এবং আচরণের সত্যত রক্ষা করা কঠিন হইয়া উঠে। জলে যখন ঢেউ উঠিতে থাকে তখন ছায়াটা আপনি বিকৃত হইয়া যায়, সে জন্ত কাহাকেও দোষ দিতে পারিন । অত্যন্ত ভয় এবং ভাবনার সময় আমাদের চিন্তা ও বাক্যের মধ্যে সহজেই বিকলতা ঘটে অথচ ঠিক এইরূপ সময়েই অবিচলিত এবং নিবিকার সত্যের প্রয়োজন সকলের চেয়ে বেশি । প্রতিদিন অসত্য ও অৰ্দ্ধসত্য আমাদের তত গুরুতর অনিষ্ট করেন। কিন্তু সঙ্কটের দিনে তাহার মত শক্র আর কেহ নাই। অতএব ঈশ্বর করুন, আজ যেন আমরা ভয়ে, ক্রোধে, আকস্মিক বিপদে, দুৰ্ব্বল চিত্তের অতিমাত্র আক্ষেপে আত্মবিশ্বত হইয়া নিজেকে বা অন্তকে ভুলাইবার জন্ত কেবল কতকগুলা ব্যর্থ বাক্যের ধূলা