পাতা:রাজা প্রজা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

> 89 রাজা প্রজা । তুলিতেছে, যাহা অক্ষমের ধৈর্য্যকেও অভিভূত করিয়া তাহাকে নিশ্চিত আত্মঘাতের অভিমুখে তাড়না করিতেছে তাহাতে তোমাদের কোনো হাতই নাই—তোমরা স্থায়কে কোথাও পীড়িত করিতেছ না, তোমরা স্বভাবসিদ্ধ অবজ্ঞা ও ঔদ্ধত্যের দ্বারা প্রতিদিন তোমাদের উপকারকে উপকৃতের নিকট নিতান্তই অরুচিকর কজিয়া তুলিতেছ না, যদি কেবল আমাদেরই দিকে তাকাইয়া এই কৃথাই বল যে, অকৃতার্থের অসন্তোষ ভারতের পক্ষে অকারণ অপরাধ এবং অপমানের দুঃখদাহ ভারতের পক্ষে নিরবচ্ছিন্ন অকৃতজ্ঞতা, তবে সেই মিথ্যাবাক্যকে রাজতক্তে বসিয়া বলিলেও তাহা ব্যর্থ হইবে এবং তোমাদের টাইমসের পত্ৰলেখক, ডেলিমেলের সংবাদ-রচয়িত এবং পায়োনিয়ার ইংলিশম্যানের সম্পাদকে মিলিয় তাহাকে ব্রিটিশ পগুরাজের ভীমগর্জনে পরিণত করিলেও সেই অসত্যের দ্বারা তোমরা কোনো শুভফল পাইবে না। তোমার গায়ে জোর আছে বটে তৰু সত্যের বিরুদ্ধেও তুমি চক্ষু রক্তবর্ণ করিবে এত জোর নাই। নূতন আইনের দ্বারা নূতন লোহার শিকল গড়িয়া তুমি বিধাতার হাত বাধিতে পরিবে না । অতএব মানবপ্রকৃতির সংঘাতে বিশ্বের নিয়মে যে আবৰ্ত্ত পাক খাইয়া উঠতেছে তাহার তীবষ্ণু স্মরণ কৰিয়া আমার প্রবন্ধটুকুর বাৰু তাহাকে নিরন্ত করিতে পারিব এমন রাশা আমার নাই। দুৰ্ব্বদ্ধি যখন জাগ্রত হইয় উঠে তখন একথা মনে রাখিতে হইবে সেই দুৰ্ব্বদ্ধির মূলে বহুদিনের বহুতর কারণ সঞ্চিত হইয়া উঠিতেছিল ; একথা মনে রাখিতে হইবে, যেখানে এক পক্ষকে সৰ্ব্বপ্রকারে অক্ষম ও অনুপায় করা হইয়াছে সেখানে ক্রমশই অপর পক্ষের বুদ্ধিভ্রংশ ও ধৰ্ম্মহানি ঘটা একেবারেই অনিবাৰ্য্য —যাহাকে নিয়তই অশ্রদ্ধা অসন্মান করি তাহার সহিত ব্যবহার করিয়া মানুষ কদাচই আত্মসম্মানকে উজ্জল রাখিতে পারে না—দুৰ্ব্বলের সংস্রবে সবল হিংস্র হইয় উঠে এবং অধীনের সংস্রবে স্বাধীন অসংযত