পাতা:রাজা প্রজা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
ইংরাজ ও ভারতবাসী।
২৭

তোমার “কল রিটার্ন” করা যাইতেও পারে–তবে কি তৎক্ষণাৎ আপনাকে পরমসম্মানিত জ্ঞান করিয়া পুলকিত হইয়া উঠিব, না বলিব–ইহারই জন্য আমার সম্মান! তবে এ ছদ্মবেশ আমি ছিঁড়িয়া ছুঁড়িয়া ফেলিয়া দিলাম; যতক্ষণে না আমার সমস্ত স্বজাতিকে আমি যথার্থ সম্মানযোগ্য করিতে পারিব ততক্ষণ আমি রঙ মাখিয়া এক্‌সেপ্‌শন সাজিয়া তোমাদের দ্বারে পদার্পণ করিব না।

আমি তো বলি, সেই আমাদের একমাত্র ব্রত। সম্মান বঞ্চনা করিয়া লইব না, সম্মান আকর্ষণ করিব; নিজের মধ্যে সম্মান অনুভব করিব। সেদিন যখন আসিবে তখন পৃথিবীর যে সভায় ইচ্ছা প্রবেশ করিব–ছদ্মবেশ, ছদ্মনাম, ছদ্মব্যবহার এবং যাচিয়া মান কাঁদিয়া সোহাগের কোনো প্রয়োজন থাকিবে না।

উপায়টা সহজ নহে। কিন্তু পূর্বেই বলিয়াছি, সহজ উপায়ে কোন্‌ দুঃসাধ্য কাজ হইয়াছে! বড়ো কঠিন কাজ; সেইজন্য অন্য-সমস্ত ফেলিয়া তাহারই প্রতি বিশেষ মনোযোগ করিতে হইবে।

কার্যে প্রবৃত্ত হইবার আরম্ভে এই পণ করিয়া বসিতে হইবে যে, যতদিন-না সুযোগ্য হইব ততদিন অজ্ঞাতবাস অবলম্বন করিয়া থাকিব।

নির্মাণ হইবার অবস্থায় গোপনের আবশ্যক। বীজ মৃত্তিকার নিম্নে নিহিত থাকে, ভ্রূণ গর্ভের মধ্যে প্রচ্ছন্নভাবে রক্ষিত হয়। শিক্ষাবস্থায় বালককে সংসারে অধিক পরিমাণে মিশিতে দিলে সে প্রবীণ-সমাজের মধ্যে গণ্য হইবার দুরাশায় প্রবীণদিগের অযথা অনুকরণ করিয়া অকালপক্ক হইয়া যায়। সে মনে করে, সে একজন গণ্যমান্য লোক হইয়া গিয়াছে; তাহার আর রীতিমতো শিক্ষার প্রয়োজন নাই–বিনয় তাহার পক্ষে বাহুল্য।

পাণ্ডবেরা পূর্বগৌরব গ্রহণ করিতে প্রবৃত্ত হইবার পূর্বে অজ্ঞাতবাসে