পাতা:রাজা প্রজা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Es e রাজা প্রজ{ । অবনতপ্রায় হইয়া কনগ্রেসের উদ্দেশুপথে বাধাস্বরূপ হুইয়া দাড়াইয়াছেন। এই সকল কারণে ইংরাজের মনে একটা বিকার উপস্থিত হইয়াছে— গবর্মেন্টের ইহাতে কোন হাত নাই ! কেবল ইহাই নহে। কনগ্রেস অপেক্ষ গোরক্ষণী সভাটাতে ইংরাজের মনে অধিক আন্দোলন উপস্থিত করিয়াছিল। তাহার। জানেন ইতিহাসের প্রারম্ভকাল হইতে যে হিন্দুজাতি আত্মরক্ষার জন্ত কখনও একত্র হইতে পারে নাই, চাই কি গোরক্ষার জন্য লে জাতি একত্র হইতে পারে। অতএব, সেইস্বত্রে যখন হিন্দু মুসলমামের বিরোধ আরম্ভ হইল তখন স্বভাবতই মুসলমানের প্রতিই ইংরাজের দরদ বাড়িয়া গিয়াছিল। তখন উপস্থিতক্ষেত্রে কোন পক্ষ অধিক অপরাধী, অথবা উভয় পক্ষ নুনাধিক অপরাধী কি না তাহ অবিচলিতচিত্তে অপক্ষপাত সহকারে বিচার করিবার ক্ষমতা অতি অল্প ইংরাজের ছিল । তখন তাহারা ভীষ্ঠ চিত্তে একটা রাজনৈতিক সঙ্কট কিরূপে নিবারণ হইতে পারে সেইদিকেই অধিক মনোযোগ দিয়াছিলেন । তৃতীয় খণ্ড সাধনায় “ইংরাজের আতঙ্ক” নামক প্রবন্ধে আমরা সাওতাল দমনের উদাহরণ দিয়া দেখাইয়াছি, ভয় পাইলে সুবিচার করিবার ধৈর্য্য থাকে না এবং যাহারা জ্ঞানতঃ অথবা অজ্ঞানতঃ ভীতির কারণ, তাহাদের প্রতি একটা নিষ্ঠুর হিংস্র ভাবের উদয় হয়। এই কারণে—গবমেণ্ট নামক যন্ত্রটি যেমনি নিরপেক্ষ থাক গবর্মেন্টের ছোটবড় যন্ত্রীগুলি যে আদ্যো পান্ত বিচলিত হইয়া উঠিয়াছিলেন তাহা তাহারা বারম্বার অস্বীকার করিলেও লক্ষণে স্পষ্টই প্রকাশ পাইয়াছিল এখনো প্রকাশ পাইতেছে। এবং সাধারণ ভারতবর্ষীয় ইংরাজের মনে বিবিধ স্বাভাবিক কারণে একবার এইরূপ বিকার উপস্থিত হইলে তাহার যে ফল সে ফলিতে থাকিৰেই ;-ক্যান্থটি যেমন সমুদ্রতরঙ্গকে নিয়মিত করিতে পারেন নাই গবর্মেন্টও সেইরূপ স্বাভাবিক নিয়মকে বাধা দিতে পারিবেন না ।