পাতা:রাজা প্রজা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* e. .' .. রাজা প্রজা । সংবাদপত্র পড়েও না, সংবাদপত্রে লেখেও না ;–একটা ছোট বড় কাণ্ড হইয়া গেল অথচ এই মুক নিৰ্ব্বাক প্রজা সম্প্রদায়ের মনের কথা কিছু বোঝা গেল না। ব্যাপারটি রহস্তাবৃত রহিল বলিয়াই সাধারণের নিকট তাহার একটা অযথা এবং কৃত্রিম গৌরব জন্মিল। কৌতুহলী কল্পনা হারিসন রোডের প্রান্ত হইত্তে আরম্ভ করিয়া তুরস্কের অৰ্দ্ধচন্দ্রশিখরী রাজপ্রাসাদ পর্য্যস্ত সম্ভব ও অসম্ভব অনুমানকে শাখাপল্লবায়িত করিয়া চলিল। ব্যাপারটি রহস্তাবৃত রহিল বলিয়াই আতঙ্কচকিত ইংরাজি কাগজ কেহ বলিল ইহা কনগ্রেসের সহিত যোগবদ্ধ রাষ্ট্রবিপ্লবের স্বচন, কেহ বলিল মুসলমানদের বসতিগুলা একেবারে উড়াইয়া পুড়াইয়া দেওয়া যাক, কেহ বলিল এমন নিদারুণ বিপৎপাতের সময় তুহিনাবৃত শৈলশিখরের উপর বড়লাটু সাহেবের এতটা সুশীতল হইয়া বসিয়া থাকা উচিত হয় না। ( রহস্তই অনিশ্চিত ভয়ের প্রধান আশ্রয় স্থান—এবং প্রবল ব্যক্তির অনিশ্চিত ভয় দুৰ্ব্বল ব্যক্তির নিশ্চিত মৃত্যু ! রুদ্ধবাক সংবাদপত্রের মাঝখানে রহস্তান্ধকারে আচ্ছন্ন হইয়া থাক। আমাদের পক্ষে বড়ই ভয়ঙ্কর অবস্থা। তাহাতে করিয়া আমাদের সমস্ত ক্রিয়াকলাপ রাজপুরুষদের চক্ষে সংশয়ান্ধকারে অত্যন্ত কৃষ্ণবর্ণ দেখাইবে । দুরপনেয় অবিশ্বাসে রাজদও উত্তরোত্তর খরধার হইয়া উঠিবে এবং প্রজার হৃদয় বিষাদে ভারাক্রান্ত ও নিৰ্ব্বাক্ নৈরাস্তে বিষতিক্ত হইতে থাকিবে। আমিরা ইংরাজের একান্ত অধীন প্রজা, কিন্তু প্রকৃতির নিয়ম তাহার দাসত্ব করে না। আঘাত করিলে আমরা বেদন পাইব ; ইংরাজ হাজার চক্ষু রক্তবর্ণ করিলেও এ নিয়মটাকে দেশান্তরিত করিতে পরিবেন না। তাহার রাগ করিয়া আঘাতের মাত্রা বাড়াইতে পারেন, কিন্তু বেদনার মাত্রাও সঙ্গে সঙ্গে বাড়িয়া উঠিবে। কারণ, সে বিধির নিয়ম ; পিনালকোডে তাহার কোন নিষেধ নাই। অন্তৰ্দাৰ বাক্যে প্রকাশ না