পাতা:রাজা প্রজা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* 8 রাজা প্রজা । ইহা লইয়া আমরা প্রায় বকুনি খাই । যাহারা সাত সমুদ্র পার হইয়া আমাদের ভালর জন্য উপদেশ দিতে আসেন তাহাদের কথা আমাদের নতশিরে শোনা উচিত। কারণ র্তাহারা যে হতভাগ্য আমাদের মত কেবল কথাই বলিতে জানেন তাহা নহে--কথা যে কি করিয়া শোনাইতে হয় তাহাও তাহীদের অবিদিত নাই। আমাদের দুটো কানের উপরেই তাহাদের দখল সম্পূর্ণ। কিন্তু উপদেশ ও ভৎসনা ত বার বাৱ শুনিয়াছি ; আমরা যে কত অধম তাহা আমাদের স্কুলপাঠ্য জিয়োগ্রাফির পত্রে মৰ্ম্মরিত ও কনভোকেশন হলে প্রতিধ্বনিত হইতেছে ; আমাদের ক্ষীণ কৈফিয়ং ইহাকে ছাপাইয়া উঠিতে পারিবে না ; তবু না বলিয়া বাচি কই ? নত শিরকে আর কত নত করিব ? আসল কথা, সকল জাতির মধ্যেই অত্যুক্তি ও আতিশয্য আছে। নিজেরটাকেই অত্যন্ত স্বাভাবিক ও পরেরটাকেই অত্যন্ত অসঙ্গত বোধ হয়। যে প্রসঙ্গে আমাদের কথা আপনি বাড়িয়া চলে, সে প্রসঙ্গে ইংরেজ চুপ—যে প্রসঙ্গে ইংরেজ অত্যন্ত বেশি বকিয়া থাকে, সে প্রসঙ্গে আমাদের মুখে কথা বাহির হয় না। আমরা মনে করি— ইংরেজ বড় বাড়াবাড়ি করে, ইংরেজ মনে করে, প্রাচ্যলোকের পরিমাণবোধ নাই । আমাদের দেশে গৃহস্থ অতিথিকে সম্বোধন করিয়া বলে—“সমস্ত আপনারি—আপনারি ঘর, আপনারি বাড়ী।” ইহা অত্যুক্তি। ইংরেজ তাহার নিজের রান্নাঘরে প্রবেশ করিতে হইলে রাধুনিকে জিজ্ঞাসা করে—“ঘরে ঢুকিতে পারি কি ?” এ একরকমের অত্যুক্তি। স্ত্রী মুনের বাটি সরাইয়া দিলে ইংরেজ স্বামী বলে—“আমার ধন্যবাদ জানিবে ” ইহা অত্যুক্তি। নিমন্ত্রণকারীর ঘরে চৰ্ব্ব্যচোষ্য থাইয়া এবং বাধিয়া এদেশীয় নিমন্ত্রিত বলে—“বড় পরিতোষ লাভ করিলাম”—অর্থাৎ