পাতা:রাজা প্রজা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অত্যুক্তি। Ե Գ বিস্তর ক্ষতি হইয়াছে—আর ইংরেজের স্বভাবে ইংরেজের কি কোনো লোক্‌সান করে নাই ? গোপন-মিথ্যা কি সেখানে ঘরে-বাহিরে বিহার কবিতেছে না ? সেখানে খবরের কাগজে খবর-বানানো চলে, তাহ দেখা গিয়াছে এবং সেখানে ব্যবসাদার-মহলে শেয়ার কেনা-বেচার বাজারে যে কিরূপ সৰ্ব্বনেশে মিথ্যা বানানো হইয়া থাকে, তাহা কাহারো অগোচর নাই । বিলাতে বিজ্ঞাপনের অত্যুক্তি ও মিথ্যোক্তি নানা বর্ণে নানা চিত্রে নানা অক্ষরে দেশ-বিদেশে নিজেকে কিরূপ ঘোষণা করে, তাহা আমরা জানি— এবং আমরাও ভদ্রাভদ্রে মিলিয়া নিলজভাবে এই অভ্যাস গ্রহণ করিয়াছি ! বিলাতে পলিটিক্সে বানানো বাজেট তৈরি করা, প্রশ্নের বানানো উত্তর দেওয়া প্রভৃতি অভিযোগ তুলিয়া এক পক্ষের প্রতি অপৰ পক্ষে যে সকল দোষারোপ করিয়া থাকেন, তাহা যদি মিথ্যা হয় তবে লজ্জার বিষয়, যদি না হয়, তবে শঙ্কার বিষয় সন্দেহ নাই। সেখানকার পালামেণ্টে পালামেণ্ট সঙ্গত ভাষায় এবং কখনো বা তাহা লঙ্ঘন করিয়া ও বড় বড় লোককে মিথুক, প্রবঞ্চক, সত্যগোপনকারী, বলা হইয়া থাকে , হয়, এরূপ নিন্দাবাদকে অত্যুক্তিপরায়ণতা বলিতে হয়, নয়, ইংলণ্ডের পলিটিক্স, মিথ্যার দ্বারা জীর্ণ, এ কথা স্বীকার করিতে হয়। যাহা হউক, এ সমস্ত আলোচনা করিলে এই কথা মনে উদয় হয় যে, বরঞ্চ অত্যুক্তিকে মুস্পষ্ট অত্যুক্তিরূপে পোষণ করাও ভাল, কিন্তু অত্যুক্তিকে সুকৌশলে ছটিয়া-ছুটিয়া তাহাকে বাস্তবের দলে চালাইবার চেষ্টা করা ভাল নহে—তাহাতে বিপদ অনেক বেশি।