পাতা:রাজা রামমোহন রায়-প্রণীত গ্রন্থাবলী.pdf/১৫৮

( ১৫১ ) জিজ্ঞাসা কর্তব্য যে ভগবতীকে তুমি ব্রহ্মময়ী করিয়া বিশ্বাস করিয়াছ আর কহিতেছ দেবী মাহাক্স্যে ৷ সৰ্ব্বস্বরূপে সৰ্ব্বেণে ॥ যে তুমি সৰ্ব্ব স্বরূপ এবং সকলের ঈশ্বরী হও । তবে তুমি সকল বস্তুকে ভগবতী জ্ঞান করি য়াও পঙ্ক চন্দন শত্রু মিত্রকে প্রভেদ করিয়া কেন জান। সে ব্যক্তি যদি বৈষ্ণব হয়েন তবে তাহাকে জিজ্ঞাসা কৰ্ত্তব্য যে তোমার বিশ্বাস এই যে । সৰ্ব্বং বিষ্ণুময়ং জগৎ' যে যাবৎ সংসার বিষ্ণুময় হয়। গীতায় ভগবান কৃষ্ণের বাক্য একাংশেন স্থিতোজগৎ . আমি জগৎকে একাংশেতে ব্যাপিয়া আছি। তবে তুমি বৈষ্ণব হইয বিষ্ণুকেসৰ্ব্বত্র জানিয়াও পঙ্ক চন্দন শত্রু যিত্রের ভেদ কেন করহ। এই রূপ,সকল দেবতার উপাসকেরে জিজ্ঞাসা করিলে যে উত্তর তাহারা দিবেন সেই উত্তর প্রায় আমাদের পক্ষ হইবেক । আর কোনো কোনো পণ্ডিতেরা কহিয়া থাকেনু যে তোমরা ব্ৰহ্মজ্ঞানী কহও তাহার মত কি কৰ্ম্ম করিয়া থাকহ। এ যথার্থ বটে যে যে রূপ কৰ্ত্তব্য এ ধৰ্ম্মের তাহা আমাদের হইতে হয় নাই তাহাতে আমরা সৰ্ব্বদা সাপরাধ আছি। কিন্তু শাস্ত্রের ভরসা আছে গীতা । পাৰ্থ নৈবেহ নামুত্র বিনাশস্তস্য বিদ্যতে । নহি কল্যাণকৃৎ কশ্চিৎ দুৰ্গতিং তাত গচ্ছতি ॥ যে কোন ব্রহ্মনিষ্ঠ ব্যক্তি জ্ঞানের অভ্যাসে যথার্থ রূপ যত্ব না করিতে পারে তাহার ইহলোকে পাতিত্য পরলোকে নরকোৎপত্তি হয় না যে হেতু শুভকারীর হে অৰ্জুন কদাপি দুৰ্গতি জন্মে না। কিন্তু ঐ পণ্ডিতেরদিগ্যে জিজ্ঞাসা কৰ্ত্তব্য যে তাহার। ব্রাহ্মণের যে যে ধৰ্ম্ম প্রাতঃকাল অবধি রাত্রি পর্যন্ত শাস্ত্রে লিখিয়াছেন,তাহার লক্ষাংশের একাংশ করেন কি না বৈষ্ণবের শৈবের এবং শাক্তের যে যে ধৰ্ম্ম তাহার শতাংশের একাংশ তাহার করিয়া থাকেন কি না যদি এ সকল বিনাও তাহারা কেহ ব্রাহ্মণ কেহ বৈষ্ণব কেহ শৈব ইত্যাদি কহাইতেছেন তবে আমাদের সর্ব প্রকার অনুষ্ঠান করিতে অশকু দেখিয়া এ রূপ ব্যঙ্গ কেন করেন। মহাভারতে। রাজন সর্ষপমাত্রাণি পরছিদ্রাণি পশ্যতি | আত্মনোৰিলুমাত্রাণি পশ্যন্নপি নপশ্যতি ॥ পরের ছিদ্র সর্ষপ মাত্র লোকে দেখেন আপনার ছিদ্র বিলমাত্র হইলে দেখিয়াও দেখেন না। সকলের উচিত যে আপন আপন অনুষ্ঠান যত্ন পূর্বক করেন সংপূম অনুষ্ঠান না করিলে উপাসনা