পাতা:রাজা রামমোহন রায়-প্রণীত গ্রন্থাবলী.pdf/১৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

( ১৯২ ) {যমন কুপথ্য বাসনা করে যে রোগী, তাহাকে উত্তম বৈদ্য কদাপি কুপথ্য দেন না। ইতি তৃতীয় প্রকরণং। ১৭ পৃষ্ঠায় ১৩ পংক্তিতে লিখেন, যে বিধবার তৈল- তাম্বল মৈথুনাদি বর্জনরূপ যে ব্রহ্মচৰ্য্য, তাহাকে নিষ্কাম কৰ্ম্ম এবং মুক্তি সাধন কহা শাস্ত্র বিরুদ্ধ হয়, এবং ইহার দুই প্রমাণ দিয়াছেন ; এক এই, যে মনুবচনে বুঝাইতেছে, যে পতি মরিলে সাধী স্ত্রীর ধৰ্ম্ম আকাঙ্ক্ষা করিয়া মরণ কাল পৰ্য্যন্ত ব্রহ্মচৰ্য্য করিবেন, অতএব আকাঙ্ক্ষা শব্দ দ্বারা ব্রহ্মচর্য্য সকাম বুঝাইল ; দ্বিতীয়ত মনুর পরবচনে বুঝাইতেছে, যে কুমার ব্রহ্মচারির ন্যায় বিধবা ব্রহ্মচৰ্য্য ধৰ্ম্মের অনুষ্ঠান করিয়া স্বর্গে যান, ইহাতে স্বৰ্গ ফল শ্রবণ দ্বার ব্রহ্মচৰ্য্য কাম কৰ্ম্ম, ইহা স্পষ্ট বুঝাইল ॥ উত্তর –বিধবার ব্রহ্মচর্য ধৰ্ম্ম নিষ্কাম, এবং মুক্তি সাধন হইতে পারে না, এরূপ কথন অতি আশ্চৰ্য্যকর, ঘুে হেতু কি ব্রহ্মচৰ্য্য কি অন্য কোনো কৰ্ম্ম তাহাকে কামনা পূর্বক করা, কি কামনা ত্যাগ পূর্বক করা, ইহা কৰ্ত্তার অধীন হয় ; কোনো ব্যক্তি ব্রহ্মচৰ্য্যাদি কৰ্ম্মকে স্বর্গ ভোগ নিমিত্ত করে, আর কোনো ব্যক্তি কামনার ত্যাগ পূর্বক উহাব অনুষ্ঠান করিয়া মুক্তি পদকে ক্রমশঃ প্রাপ্ত হয় ; অতএব বিধবা যদি ব্রহ্মচর্য্যের অনুষ্ঠান"কামনা রহিত হইয়া করে, তথাপি তাহার কৰ্ম্ম নিষ্কাম হইতে পারে না, এ রূপ প্রত্যক্ষের এবং শাস্ত্রের অপলাপ কর। আপনকার , ন্যায় বিজ্ঞ ব্যক্তিরদের কদাপি কৰ্ত্তব্য নহে ৷ মন্নুর বচনে যে লিখিয়াছেন, সাধী স্ত্রীর ধৰ্ম্মকে আকাঙ্কা করিয়া ব্রহ্মচর্যা করিবেক, ইহাতে রহ্মচর্য্যের আবশ্যক কাম্য হওয়া কদাপি বুঝায় না, যে হেতু মুক্তিতে ইচ্ছা করিয়া জ্ঞানের অভ্যাস করা যায ; ইহাতে কোনে শাস্ত্রে অথবা কোনো পণ্ডিতেরা জ্ঞানাভ্যাসকে কাম্য কহেন না, কেননা প্রয়োজন ব্যতিরেকে কি দৈহিক কি মানস ক্রিয়া মাত্রেই প্রবৃত্তি হয় না ? অতএব ঐছিক কিম্বা পারত্রিক ফল কামনা পূর্বক কৰ্ম্মের অনুষ্ঠান করিলে, সেই কৰ্ম্মকে কাম কহ যায়, সে কাম্য কৰ্ম্ম সৰ্ব্বথা নিষিদ্ধ। মনু ৷ ইহ বামুত্র বা কাম্যং প্রবৃত্তং কৰ্ম্ম কীৰ্ত্ততে ৷ কি ইহলোকে কি পরলোকে বাঞ্ছিত ফল পাইব ? এই কামনাতে যে কৰ্ম্ম করে, তাহার নাম প্রবৃত্ত কৰ্ম্ম, অর্থাৎ স্বর্গাদি ভোগের পর জন্ম মরণ রূপ