পাতা:রাজা রামমোহন - দেবেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য্য.pdf/২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ পরিচ্ছেদ মহা পণ্ডিত হইয়া উঠিলেন। এমন কি বড় বড় বিদ্বান সাহেবেরাও র্তাহাকে একবাক্যে অদ্বিতীয় পণ্ডিত বলিয়া স্বীকার করিয়া তঁহার কাছে মস্তক নত করিতেন। ইহা বাঙ্গালীর ছেলের পক্ষে কম সৌভাগ্যের কথা নহে। ধন্য র্তাহার চেষ্টা, যত্ন, পরিশ্রম ও অধ্যবসায় । এরূপ সাধনার অসাধ্য কি থাকিতে পারে ? চতুর্থ পরিচ্ছেদ দেশে ফিরিয়া রামমোহন যেমন নানা ভাষা শিখিতে লাগিলেন, সেই সঙ্গে সঙ্গে সেই সকল ভাষার-সেই সকল জাতির ধৰ্ম্ম পুস্তকসকল পড়িয়া তাহার ভিতর হইতে প্ৰকৃত ও পবিত্ৰ ধৰ্ম্মের তথ্য সকল সংগ্ৰহ করিতে লাগিলেন । জ্ঞান উপাৰ্জনে তাহার এমন প্ৰবল লালসা-প্ৰকৃত ধৰ্ম্মের সত্য ও তত্ত্ব আবিষ্কার করিতে এমন আকুল আগ্ৰহ, যে তিনি আহার-বিহার, আরাম-বিরাম ভুলিয়া গেলেন—দিবারাত্রি পুস্তকে মগ্ন হইয়া রহিলেন। তঁহার পাঠের শক্তি, অধ্যবসায়, চেষ্টা, পরিশ্রম, ঐকান্তিকতা প্রভৃতি গল্পের মত প্ৰবাদ বাক্য হইয়া দাড়াইল । বাল্যকাল হইতে মানুষ যে রকম ভাবে চলে, বয়সকালে তাঁহাই তাহার স্বভাব হইয়া দাঁড়ায়। রামমোহন বাল্যকাল হইতেই খেলা-ধূলা, গল্প-গুজব করা ছাড়িয়া, কেবল বিদ্যা-শিক্ষা এবং জ্ঞান-উপার্জনেই মন দিয়াছিলেন, সুতরাং বয়সের সঙ্গে সঙ্গে তঁাহার স্বভাবও ঠিক সেইরূপ হইয়া দাড়াইল। তঁহার পড়িবার স্পৃহা, পরিশ্রম করিবার শক্তি, ঐকান্তিকতা, আগ্ৰহ, চেষ্টা, যত্ন ও অধ্যবসায় এরূপ বাড়িল যে ঠিক তাহা উপকথার গল্পের মত, শুনিয়া লোকে অবাক হইয়া চাহিয়া রহিল, আশ্চৰ্য্য হইয়া মনে মনে ভাবিল-মানুষ এ কি এ রকম হইতে পারে ?