পাতা:রাজা রামমোহন - দেবেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য্য.pdf/৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সপ্তম পরিচ্ছেদ NO রামমোহন। এ সুযোগ ছাড়িলেন না, তিনি ‘বেণ্টিক” বাহাদুরকে সতীদাহের নৃশংসতা, অধাৰ্ম্মিকতা, অত্যাচার প্রভৃতি সুন্দরীরূপে বুঝাইয়া প্ৰতিকার চাহিলেন। ‘বেণ্টিক” বাহাদুর তখন আইন করিয়া চিরকালের জন্য সেই পাশবিক অত্যাচারের প্রথা বন্ধ করিয়া দিলেন । রামমোহন রায় তখন এক বিরাট সভা ক’রে-দেশের সকল লোকের পক্ষ হয়ে লাট সাহেববাহাদুরকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাইলেন । যতদিন এ দেশে ইতিহাস থাকিবে ততদিন রাজা রামমোহন রায়ের এই অক্ষয় কীৰ্ত্তি চিরস্মরণীয় হইয়া থাকিবে । কেবল তাহাই নহে-রমণী-পীড়নকারী কৌলিন্যপ্ৰথা, বালিকাবিবাহ প্ৰথা, কুলীন কন্যাগণকে চিরকুমারী করিয়া রাখিবার প্রথা প্রভৃতি নানা প্ৰকার নিষ্ঠুর প্রথাসকল হিন্দুসমাজের বুক হইতে একেবারে তুলিয়া দিবার জন্যও তিনি প্ৰাণপাত চেষ্টা ও অক্লান্ত পরিশ্রম করিতে লাগিলেন । তঁহার সেই চেষ্টা, পরিশ্রম, স্বাৰ্থত্যাগের ও লোক-হিতাকাঙ্ক্ষার গুণে হিন্দুরমণীগণের বহুকষ্ট চিরকালের জন্য দূরীভূত হইল। ধন্য রামমোহনা! যাহা দশজন লোক দশটা জীবন লইয়া করিতে পারেন না।--তাহা তিনি এক জীবনেই সমাধা করিলেন । তারপর রামমোহন। এ দেশে শিক্ষা বিস্তার কাৰ্য্যে মনযোগ দিলেন। তিনি বুঝিলেন যে পাশ্চাত্য শিক্ষা ভিন্ন এ দেশের লোকের উন্নতি হইবে না, তখন এই বিষয় লইয়া রাজপুরুষদের কাছে অবিরত লেখা-লিখি ও আন্দোলন সুরু করিয়া দিলেন । মহামতি ভারতবন্ধু • ডেভিড হেয়ার সাহেব-রামমোহনের পরম বন্ধু ছিলেন। তিনি এই মহৎ উদ্দেশ্যে রামমোহনের সঙ্গে যোগ দিলেন, এই দুই মহাপুরুষের চেষ্টায় এদেশে ইংরাজী শিক্ষার পথ প্রসারিত হইল । কিন্তু তখনও দেশবাসী রামমোহনকে চিনিতে পারেন নাই,